বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘হাসিনা হাজার হাজার পরিবারকে বিগত ১৬ বছরে উৎখাত করেছে। সে একদিনে খুনি হাসিনা হয়নি। যাকে টার্গেট করেছে, তাকেই মেরেছে। আগামীতে কাউকে এমন হতে দেবো কি না তা আমাদের ওপর নির্ভর করবে। খুনি শেখ হাসিনা যা করেছে তার ফলাফল ২৪ এর অভ্যুত্থান। কেউ যদি ভুল পথে হাঁটেন তাদেরও পরিণতি এমন হবে। আমরা কাউকে ছাড়বো না, তাই বুক টান করে প্রতিবাদ করতে হবে। আমদের এ লড়াই বাংলাদেশকে সামনে রেখে হোক, মানুষের জন্য হোক।’
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে এক সেমিনারে বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে ও ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ জুলাই বিপ্লবোত্তর আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনা বিষয়ে এই সেমিনার আয়োজন করা হয়।
সারজিস আলম বলেন, ‘এত জীবন, রক্ত দেওয়া- কোনোভাবেই পূরণ হওয়ার নয়। আমরা আমাদের জায়গা থেকে যখন শহীদদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলি তখন তারা চায় খুনি হাসিনা দোসরদের বিচার। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ এখনও দেশ দোসরমুক্ত হয়নি। কারণ দেশের অনেক রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দোসরদের মদত দিচ্ছে। আমরা সংস্কারের কথা বলি, কিন্তু যারা এমন করছে তাদের বিরুদ্ধে কেন কথা বলছি না। তাদের বিরুদ্ধে কথা না বলতে পারলে অভ্যুত্থানের কোনও সফলতা আসবে না। আজকে চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট হচ্ছে- কারা করছে তাদের কথা কেন বলতে পারছি না। প্রত্যেকটা বাজারে চাঁদাবাজি জন্য পণ্যের দাম বাড়ছে। এতে সরকারকে দোষারোপ করে কোনও লাভ নেই।’
তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে শেখ হাসিনার মাধ্যমে নানাভাবে অত্যাচারিত হয়েছে এ দেশের মানুষ। তার ক্ষমতার পিপাসার কাছে, গোলাপগঞ্জের কাছেও জিম্মি হয়েছিল এ দেশের মানুষ। তাই প্রত্যেকটি মানুষ জীবনের মায়া ত্যাগ করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। হাসিনা খুনির দোসররা মাদ্রাসার ছাত্রকে দেখলে টার্গেট করে গুলি করতো। তাই ছাত্ররা পাঞ্জাবি পাজামা না পরে টিশার্ট গায়ে দিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখে। শুধু মাদ্রাসা নয়, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে। যারা হাসিনার দোসরদের ভয়ে আন্দোলনে যেতে পারেনি তারা তাদের স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনদের আন্দোলনে যেতে সহযোগিতা করেছে।’
আয়োজক প্রতিষ্ঠান আস সিরাজ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুফতি মুহিববুল্লাহর সভাপতিত্বে সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বক্তব্য রাখেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লুৎফর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ মাহাদী, ড. আতিক মুজাহিদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.একে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
এরপর শহীদ ১৫ জন পরিবারের সদস্যদের মাঝে অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন অতিথিরা। পরে জাগরণী সংগীত অনুষ্ঠিত হয়।