বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পলাতক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিয়ে গিয়েছে। তারা ব্যাংক লুট করে রাজকোষ শূন্য করে দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে দিয়েছে।
তিনি ১১ জানুয়ারি দুপুরে কুয়েত সিটির আল আরদিয়া খাইমায় আয়োজিত এক সর্বদলীয় প্রীতি সমাবেশ ও গণসংবর্ধনা সভায় বক্তব্য রাখছিলেন। হাফেজ মাওলানা নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশী কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার জনগণ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। এ সমাবেশ একটি জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছিলো।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, বিগত জালেম সরকার দেশের মানুষের উপর নানাভাবে জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছিল। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামী নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে। জালেম সরকার দেশের আলেমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাদের অন্যায়ভাবে জেলে বন্দী করে তাদের উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়েছিল। মানুষকে কথায় কথায় পুলিশ দিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিলো। মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, প্রবাসীদের যথাযথ মূল্যায়ণ না করে বিগত সরকার তাদের ভিসা ও পাসপোর্ট না দিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি করেছিলো। বিদেশী দূতাবাসে অসৎ লোকদের নিয়োগ দিয়ে প্রবাসীদের পকেট কাটার ব্যবস্থা করেছিল। সৎ লোকেরা ক্ষমতায় আসলে সকল দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধ করে ইনসাফ কায়েম করবে। আপনারা যারা প্রবাসে আছেন আপনারাই বাংলাদেশের প্রতিনিধি। আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা উন্নত করবেন এটাই আমরা আশা করি।
তিনি বলেন, প্রবাসী ভাইদের নীতিবান হতে হবে। সকল ক্ষেত্রেই যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে। আপনারা যে দেশে আছেন সে দেশের আইনকানুন ভালোভাবে মেনে চলতে হবে এবং দেশের ভাবমর্যাদা উন্নত করতে হবে।
আপনারা নিজেদের পরিবার-পরিজনদের এবং দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখবেন। আপনারা ব্যক্তিগত ও পারিবারিকসহ সকল ক্ষেত্রে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলবেন। আমরা সবাই মিলেমিশে দেশ গড়ার কাজে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, দেশের ছাত্র জনতার গণআন্দোলনের মাধ্যমে যে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে সেরকম স্বৈরাচার সরকার যেন আর ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
বাংলাদেশের জনগণ আর কোন ফ্যাসিবাদী সরকারকে মানবে না। আমীরে জামায়াতের নেতৃত্বে আমরা সবাই বাংলাদেশকে একটি আদর্শবাদী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য সংগ্রাম করছি। ১১ জানুয়ারি দুপুরে আমীরে জামায়াতকে বিদায় জানান বাংলাদেশ দূতাবাসের ১ম সচিব জনাব মনিরুজ্জামানসহ দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ। দুপুরে আমীরে জামায়াত পবিত্র উমরাহ পালনের জন্য মক্কার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন। তিনি উমরাহ পালন শেষে ১২ জানুয়ারি ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন।