জামায়াতে ইসলামী দেশ ও জাতিকে এমন নেতৃত্ব উপহার দিতে চায় যারা হবেন সকল ক্ষেত্রেই মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন এবং আর্ত-মানবতা, দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত হবেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি আজ বিকাল ৩টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর হোসেন মার্কেট চত্বরে মোহাম্মদপুর থানা পশ্চিম জামায়াত আয়োজিত এক বিশাল সহযোগি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মাসুদ উজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি রবিউল ইসলাম রুবেলের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিম,ঢাকা জেলা আমীর দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য জিয়াউল হাসান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার । উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদপুর পূর্ব থানা আমীর মশিউর রহমান, উত্তর থানা আমীর আব্দুল হান্নান,দক্ষিণ থানা আমীর সাখাওয়াত হোসেন প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আওয়ামী- বাকশালীদের অপশাসন-দুঃশাসনে দেশ এখন নষ্টের দখলে চলে গেছে সবকিছু। চাঁদাবাজ, টেন্ডাবাজ, দুর্নীতিবাজ এবং সমাজ বিরোধীরা রাজনীতি সহ রাষ্ট্রের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী দেশের প্রচলিত ধারার রাজনীতির বিপরীতে নতুন ধারার রাজনীতি জাতিকে উপহার দিতে বদ্ধপরিকর। আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যই হচ্ছে অসৎপ্রবণদের রাজনীতির ময়দান থেকে বিতাড়িত করে সৎ, যোগ্য ও আল্লাহভীরুদের হাতে রাষ্ট্রের দায়িত্ব অর্পন করা। জনগণ আগামী নির্বাচনগুলোতে কোন অসৎপ্রবণ বা চাঁদাবাজকে শুধু এমপি নয় বরং কমিশনারকেও বিজয়ী হতে দেবে না। তিনি রাজনীতি থেকে সমাজ বিরোধীদের বিতাড়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালালোর আহবান জানান।
তিনি বলেন, ফ্যাসীবাদী লুটেরারা বিগত ৫৩ বছর দেশকে লুটেপুটে খেয়েছে। কিন্তু তাদেরকে আর নতুন করে সুযোগ দেওয়া হবে না। তারা জনগণের সেবার নামে দেশের সাড়ে ১২ টা বাজিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমরা সে অবস্থা থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে চাই। আমরা ক্ষমতায় গেলে দেশে শিক্ষা গ্রহণকে সহজীকরণ করবো ইনশাআল্লাহ। অবৈতনিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করবো। শিক্ষা উপকরণের মূল্যও হবে খুবই সহনীয়-নামমাত্র। যে শিক্ষা ব্যবস্থায় আল্লাহ-রাসূল (সা.) নির্দেশ ও আদর্শ অনুযায়ি জীবন গড়তে সহায়ক হবে। সর্বোপরি রাসূল (সা.) আসহাবগণের জীবনচরিত জানার সুযোগ থাকবে। সর্বোপরি সৃষ্টি হবে আখেরাতে জবাবদিহীর অনুভূতি। একই সাথে জ্ঞান-বিজ্ঞান সমৃদ্ধ জীবন ও কর্মমুখী শিক্ষা প্রদান করা হবে। ১৮ বয়স হলেই সকলের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকবে। বিদেশ থেকে ফেরৎ এনে মেধাবীদের মেধা এবং প্রজ্ঞা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজে লাগানো হবে। তিনি একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আওয়ামী-ফ্যাসীবাদীরা এমন কোন জুলুম নেই যা জামায়াতের ওপর করেনি। তারা শুধু জেল- জুলুম বা শীর্ষনেতাদের ফাঁসি দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি বরং শেষ পর্যন্ত তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে ছেড়েছে। কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হয়নি বরং স্বল্প সময়ের ব্যবধানে জনগণই তাদেরকে নিষিদ্ধ করেছে। তারা বন্দুকের নলের মুখেও আমাদেরকে হঠাতে পারেনি বরং তাদের নেতা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে জীবন নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। তিনি ফ্যাসীবাদের দেশ বিরোধী সকল সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দলমত নির্বিশেষ সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।