রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনামঃ
দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ফিরিয়ে আনতে হবে: মুহাম্মদ শাহজাহান পতিত” আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসন রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে : আমিনুল হক আগামী বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্য আমরা এমন সমাজ চাই যেখানে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ থাকবে না: মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন মতিঝিল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনী আগামী ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি গাড়িচাপায় বুয়েটশিক্ষার্থীর মৃত্যুঃ গাড়িচালকসহ দুজনের শরীরে মিলেছে অ্যালকোহল হাসান আরিফের মরদেহ দেখতে হাসপাতালে ড. ইউনূস বাণিজ্য ঘাটতি মেটাও, নইলে শুল্ক বসবে : হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের হাসান আরিফের মৃত্যু বাংলাদেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি : রাষ্ট্রপতি হাসান আরিফের মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক

বেনজীরের ক্যাশিয়ার গ্রেপ্তার

রিপোটার:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩১ Time View

রংধনু গ্রুপের পরিচালক, রূপগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ক্যাশিয়ার মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল রাজধানীর ভাটারা থানার যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজান রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ভাই ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান হিসেবে পরিচিত। মিজান রূপগঞ্জে কুত্তা মিজান নামে পরিচিত বলে জানা গেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, ভূমি দখল, লুটপাট, মারামারিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে ডিবি পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোর যে কোনো একটিতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, রফিক ও মিজানের মাধ্যমে পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ অবৈধভাবে উপার্জন করা অর্থের বিশাল একটি অংশ বিনিয়োগ করেছেন। বিশেষ করে দুবাই, সিঙ্গাপুর, কক্সবাজার ও ঢাকায় বিভিন্ন হোটেল এবং স্বর্ণ ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। রফিক-মিজানের মাধ্যমে বেনজীর আহমেদের দুবাইয়ে রয়েছে শত কোটি টাকার হোটেল ব্যবসা। রফিকের সঙ্গে বেনজীরের মালিকানায় থাকা দুবাইয়ের হোটেলটির নাম রয়্যাল কনকর্ড হোটেল অ্যান্ড সুইটস। বিলাসবহুল এ হোটেলটি দুবাই শহরের কেন্দ্রস্থলে মাকতুম স্ট্রিটে অবস্থিত। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, দুবাই ক্রিক, গল্ফ ও ইয়ট ক্লাব, সোনা ও মসলার বাজার, প্রধান কেনাকাটা ও অবসর কেন্দ্রগুলোর খুব কাছে এ হোটেল। দুবাইয়ে অবস্থিত গ্র্যান্ড মসজিদ থেকে ৩ মাইল দূরে এ হোটেলের অবস্থান।
রফিক-মিজানের মাধ্যমে দেশ থেকে টাকা পাচার করে গড়ে তোলা বেনজীরের এ হোটেলটিতে আছে অ্যাপার্টমেন্ট, এক্সিকিউটিভ, সুইটসসহ অত্যাধুনিক রুম। যেগুলোর ভাড়া সর্বনিম্ন ৩৫০ দিরহাম থেকে শুরু করে সবোর্চ্চ ১ হাজার ৫০০ দিরহাম। বাংলা টাকায় এ হোটেলের প্রতিটি রুমের ভাড়া প্রায় ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

বেনজীরের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত এই দুই ভাইয়ের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে গড়ে তুলেছেন সোনার ব্যবসা। তার জুয়েলারি শপটির নাম নিজি জুয়েলার্স। এর অবস্থান সিঙ্গাপুরের মুস্তফা মার্কেটের পাশে। এ প্রতিষ্ঠানটিতে তিনি দেশ থেকে পাচার করে প্রায় অর্ধ শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন।

শুধু দুবাই-সিঙ্গাপুরই শেষ নয়। বেনজীর আহমেদের অবৈধ টাকা রফিক-মিজানের মাধ্যমে কক্সবাজারের কলাতলীতে দুটি বিলাসবহুল হোটেলে বিনিয়োগ হয়েছে। হোটেল দুটির নাম হোটেল বেস্ট ওয়েস্টার্ন প্রিমিয়ার ও হোটেল রামাদা লিমিটেড। একই প্রক্রিয়ায় বনানীর সি-ব্লকের ১৫ নম্বর রোডের ৫৯ নম্বর বাড়ির ঠিকানায় হোটেল ইউনিক রিজেন্সি প্রতিষ্ঠা করেছেন বেনজীরের টাকায়। রফিক-মিজান আয়নাঘরের কারিগর চাকরি হারানো বিতর্কিত সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে প্রায় শত কোটি টাকার বাগানবাড়ি উপহার দেন। বেনজীর-জিয়াউলের মতো ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েক করেন দুই ভাই। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ভোট জালিয়াতি করে মিজান রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সম্প্রতি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) রংধনু গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে। এর অংশ হিসেবে মিজানের অর্থ পাচারের অভিযোগও তদন্ত চলছে।

মিজান রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান ভাই রফিকের ছত্রছায়ায় রূপগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে জমি না দেওয়ায় হিংসাত্মক হয়ে একাধিক মামলা করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ, মানুষকে বিনা অপরাধে মারধর, মাদক ব্যবসাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে রফিকুল ইসলামের গড়ে তোলা সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায়নি। কারণ যারা কথা বলেছে ও মামলা করেছে তাদের হয় খুন নতুবা এলাকা ছাড়া করেছেন মিজান। রফিক-মিজান মিলে দুই শতাধিকেরও বেশি পরিবারকে ঘরছাড়া করেন। দুই ভাই অসংখ্য সাধারণ মানুষের ভূমি জবরদখলের পাশাপাশি মাদরাসা, ঈদগাহ কবরস্থানের জমিও দখল করেন। জানা গেছে, গত ৪ ডিসেম্বর নৌ-পুলিশের সদস্যরা রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া বাজারের পাশে সেতুর নিচ থেকে শিশু ওসমান গণি স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করেন। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, স্বাধীনকে রফিকের নির্দেশে তার ভাই মিজান খুন করেন। রফিকের কথামতো বাড়ি-জমি লিখে না দেওয়ায় পরিবারের শিশু সন্তান স্বাধীনকে হত্যা করা হয়। মিজানের গ্রেপ্তারের খবরে ওই শিশুর বাবা শাহিনুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে রফিক এলাকায় এত বেশি প্রভাবশালী যে, আমি সন্তান হত্যার মামলা করতে পারিনি। থানায় গেলে হত্যার বদলে অপমৃত্যুর মামলা করতে পরামর্শ দেয় রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। শেষ পর্যন্ত মিজান গ্রেপ্তার হয়েছে। এবার আমার শিশু সন্তান হত্যার বিচার পাব। আমি সন্তান হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকারের কাছে আহ্বান জানাই। রফিক-মিজানের খুন, জমিদখল, মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণে বাহিনী ছিল উল্লেখ করে ভুক্তভোগী জয়নাল মিয়া জানান, আন্ডা রফিক তার বাহিনী নিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েক করেছে। এজন্য তার ভাই কুত্তা মিজান এলাকায় ৫০-৬০ জনের বাহিনী গড়ে তোলে। সবার কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে আমরা অভিযোগ দিলেও পুলিশ কখনো তাদের গ্রেপ্তার করেনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে দুই কুখ্যাত সন্ত্রাসীর একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। মিজানের গ্রেপ্তারের খবরে এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। আমরা চাই আন্ডা রফিককেও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক। সুত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Please Share This Post in Your Social Media

এই জাতীয় আরো খবর

খুলনায় জমি বিক্রি হবে

খুলনা-যশোর বিশ্বরোডে মোস্তফার মোড়ের নিকটে টুটুল নগর আবাসিক এলাকায় এখনই বাড়ি করার উপযোগী ১০ শতক জমি বিক্রি হবে। ডিজিটাল খাজনা খারিজ করা। সম্পূর্ণ নিষ্কন্টক। বিশ্ব রোড থেকে ২০ ফিট রাস্তা, ভেতরে ১৫ ফিট রাস্তা। উচু জমি।

যোগাযোগ: মো. মহসিন হোসেন-০১৭১১৭৮৩৮৬৮

 

© All rights reserved © 2022 deshnews24.com
Theme Customized By Max Speed Ltd.