ঢাকা: সরকার দলীয় সন্ত্রাসী ও সরকার সমর্থক কিছু শিক্ষকরা মিলে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সন্ত্রাস, মাদক, যৌন নিপীড়ন ও আত্মহননের প্ররোচনা কেন্দ্র বানিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অবন্তিকার আত্মহনন সহ ক্যম্পাসে সংগঠিত সকল অনৈতিক কর্মকান্ডের বিচারেরও দাবি জানানো হয় এই এক সমাবেশ থেকে।
মাসব্যাপী গণ-ইফতার কর্মসূচির ষষ্ঠ দিনে আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বিজয়নগরস্থ বিজয়-৭১ চত্ত্বরে এবি পার্টির এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে প্রায় সহস্রাধিক নাগরিক একসাথে বসে ইফতার গ্রহণ করে। সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন; আওয়ামীলীগ সরকারের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে এমন এক লুটেরা বাজার সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে যারা প্রতিনিয়ত খাদ্য দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সরকারি দলের ছাত্রসংগঠনের অত্যাচারে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস গুলোতে সাধারণ ছাত্রীরা সম্ভ্রম রক্ষা করে চলতে পারছেনা। কেউ কেউ কষ্টে ক্ষোভে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছে। সরকার সমর্থিত কতিপয় শিক্ষকরা এসব অপকর্মের নির্লজ্জ সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব আনোয়ার ফারুকের সঞ্চালনায় ও যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের সভাপতিত্বে গণ-ইফতার সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক, জাতীয় সংসদে মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ উদ্দিন নিজান। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন, এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজি, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জননেতা আশরাফ উদ্দিন নিজান বলেন, আজকে উপস্থিত রোজাদার ভাই যারা উপস্থিত আছেন তারাই এদের গণ-মানুষ, আপনাদেরকে নিয়েই আমরা রাজনীতি করি। আজ দেশের সাধারণ গরীব মেহনতী মানুষরা যদি তাদের অধিকার সম্পর্কে বুঝতো তাহলে আজ যারা বড় বড় ফ্ল্যাটে বা বাড়িতে থাকেন, বড় বড় গাড়িতে চড়েন তারা এই ভাবে চলতে পারতোনা। আপনাদেরকে অধিকার সচেতন হতে হবে, নিজেদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে হবে, দিল্লির অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। আজ ফিলিস্তিনের নারী শিশুদের এই রমজানেও যারা নির্বিচারে গণহত্যা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলতে হবে। তিনি এবি পার্টি আয়োজিত মাসব্যাপী গণইফতারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
মাওলানা জালাল উদ্দীন বলেন, ইফতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সরকার কেন উঠে পড়ে লেগেছে তা আমরা বুঝি। এগুলো ভারতের প্রেসক্রিপশনে চলছে। গতকাল আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্লজ্জের মতো বলেছেন কীভাবে ভারত তাদের ক্ষমতায় রেখেছে। তিনি এবি পার্টির গণ-ইফতারের প্রসংশা করে বলেন, এটা একটা মহৎ উদ্যোগ। তিনি এবি পার্টির নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে রমজান হলো সবচাইতে বড় সাম্যের উদাহরণ। স্বাধীনতার ঘোষনাপত্রের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতিতে বৈষম্যের বীজ বপন করেছে আওয়ামীলীগ। তাদের বিষাক্ত বৈষম্যের বীজে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ ক্ষত-বিক্ষত। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অবন্তীকার আত্মহত্যার জন্য যারা দায়ি, এরা সরকারি দলের গুন্ডা, এদের হাতে এর আগেও অনেক মা, বোনের সম্ভ্রমহানী হয়েছে, এই অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, এমপি মন্ত্রী যেমন ভোটের অধিকার রয়েছে তেমনি আমরা যারা সাধারণ মানুষ তাদেরও সমান ভোটাধিকার রয়েছে। আওয়ামীলীগ পুলিশ ও প্রশাসন দিয়ে যেভাবে আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এই সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে, জনগণের সকল অধিকার লুটেরাদের হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
গণ-ইফতারে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির অফিস সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুবপার্টির আহবায়ক এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব আহমদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহবায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, যুবপার্টি মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রুনা হোসাইন, রিপন মাহমুদ, পল্টন থানা আহবায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, যাত্রাবাড়ী থানা আহবায়ক সিএমএইচ আরিফ সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।