৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
সোমবার ৮ জানুয়ারি দুপুরে রংপুর নগরীর স্কাইভিউ ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জি এম কাদের বলেন, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাসে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু সরকার আমাদের কথা দিয়ে কথা রাখেনি। সরকারের নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনে সরকার যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট করতে চেয়েছে, সেখানে করেছে। আর যেখানে তাদের লোকজনকে জেতাতে চেয়েছে সেখানে তারা আমাদের লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ও জোর করে সিল মেরে হারিয়ে দিয়েছে। সার্বিকভাবে এই নির্বাচন ভালো হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনের দিন অসহায় ছিলাম। সকাল থেকেই বিভিন্ন আসনের সমস্যা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে কথা বলেছি। তারা সমাধানের কথা বললেও সমাধান হয়নি। প্রিজাইডিং অফিসারসহ প্রশাসন তাদের (সরকারদলীয় প্রার্থী) পক্ষে কাজ করেছে।
জাপা চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, ঢাকা-১ আসনে জোর করে সিল মেরে সালমা ইসলামকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও কুমিল্লা-১ আসনে আমির হোসেন ভুঁইয়া, জামালপুর-৩ আসনে সামসুল ইসলাম লিপ্টন, নরসিংদী-২ আসনে রফিকুল ইসলাম, লালমনিরহাট-৩ আসনে জাহিদ হাসান, গাইবান্ধা-৩ আসনে মইনুল রাব্বীসহ নারায়নগঞ্জ-১, রংপুরের-৪ ও রংপুর-৬ আসনের তাদের লোককে মারধর করে জোর করে সিল মেরেছে।
তিনি বলেন, এসব আসনে আমরা প্রশাসন কিংবা নির্বাচন কমিশনের কোনো সহযোগিতা পাইনি। প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে আমরা এসব আসনে জয়ী হয়ে আসতাম।
জি এম কাদের বলেন, আমরা জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেইনি, যা অনেক আগেই বলেছি। সরকার তাদের মিডিয়া দিয়ে জোটের কথা বলে বিভ্রান্ত ছড়িয়েছে। সরকার সমঝোতার কথা বলে ২৬ আসনে নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিলেও সেসব আসনে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে তাদের পক্ষে কাজ করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে সবসময় ষড়যন্ত্র হয়। আমরা সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগিয়ে যাব।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ভুল না সঠিক এখনই বলা যাবে না। তা সময়ই বলে দেবে।
তিনি আরও বলেন, সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে আমরা নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।
নির্বাচন দিয়ে অভিযোগ থাকলেও প্রত্যাখ্যান করছে না জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, ভোট প্রত্যাখ্যানের কিছু নেই। যারা জয়ী হয়েছি, আমরা ভোটের মাধ্যমে জয়ী হয়েছি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর তিনি জাপার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন।
এ সময় দলটির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন মিয়াসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।