৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনে দেশব্যাপী চলমান গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণে কর্মসূচি আরও তিন দিন বাড়িয়েছে বিএনপি।
সোমবার ০১ জানুয়ারি বিকালে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিঙে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কর্মসূচি বাড়ানোর কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘‘ আগামীকাল ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার থেকে ৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনদিন বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং এই পাতানো নির্বাচন বাতিরের দাবি এবং অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে আবারো গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরনের কর্মসূচি পালন করবে।”
‘‘ এই কর্মসূচি সফল করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের সাফল্যমন্ডিত করার জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে।”
গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে আজকে পর্যন্ত ৭দিন গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির মধ্যে এই বৃদ্ধির ঘোষণা দিলো বিএনপি।
গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ পন্ড করে দেয়ার পর ‘একতরফা’ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো চার দফায় ৫ দিন হরতাল ও এই পর্যন্ত ১২ দফায়(রোববারসহ) ২৩ দিন অবরোধ কর্মসূচি করে। এরপর পর থেকে অসহযোগ আন্দোলনের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের টানা কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য
তারিখঃ ০১ জানুয়ারি ২০২৪
সংবাদ সম্মেলন
এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী-সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
আসসালামু আলাইকুম। আপনাদের সকলকে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা।
আজ ইংরেজী নতুন বছরের প্রথম দিনটি পরমানন্দে শুভেচ্ছা জানানোর এই সময়টিতে দেশের স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের কাছে মোটেই সুখকর নয়।
পাতানো তামাশার নৌকা আর ডামীদের নির্বাচন ঘিরে সারাদেশে কায়েম করা হয়েছে চরম নৈরাজ্যকর এবং ভয়ংকর পরিস্থিতি। পুলিশ এবং আওয়ামী হানাদার তান্ডবে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মুক্তিকামী জনগন গত তিনমাস ঘর-বাড়ী ছেড়ে ফেরারী ও উদ্বাস্তু জীবন যাপন করছে। ভোট ডাকাত শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৮ কোটি মানুষের মৌলিক ভোটাধিকার আদায়ে আন্দোলনরতদের গ্রেফতারে হন্যে হয়ে উঠেছে পুলিশের পোশাক পরা আওয়ামী নাৎসীরা। জনগনের ওপর চলছে স্মরণকালের সবচাইতে ভয়াবহ নিপীড়ন-বর্বরতা।বুভুক্ষদের আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।অন্যদিকে অর্থ-বিত্তের পাহাড়ে বসা লুটেরা আওয়ামীলীগের সুখ উৎসবের রোশনাই। কোন কোন জনপদে শ্মশানের নীরবতা নেমে এসেছে।
স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণ এখন নিজ দেশেই পরাধীন। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতালিপ্সার খায়েশ মেটাতে বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার গৌরব ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে এখন বিনাভোটে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রেখেছে শেখ হাসিনার ‘ডামি সরকার’। কখন কাকে ধরতে হবে ,কাকে মারতে হবে,কাকে রাখতে হবে,কাকে সীমান্তের ওপারে ফেলে আসতে হবে,সব সিদ্ধান্তই আসে অন্য দেশ থেকে। কয়েকদিন আগেই আমরা সবাই শুনেছি,দেখেছি,চলমান ‘ডামি নির্বাচনে’ এক ‘ডামি প্রার্থী’ প্রকাশ্যেই নিজেকে ভারতের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এমন নির্লজ্জ স্বীকারোক্তির মাধ্যমে আবারো প্রমাণিত হয়েছে, এই ‘ডামি সরকারে’র স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেয়ারও ক্ষমতা নেই।
সচেতন বন্ধুরা/
শেখ হাসিনার পিতা মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃত্ববাদী একদলীয় দেশসমূহের মতো একদলীয় শাসনের কায়দায় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় ফিরে তার কন্যা দেশে নব মডেলের আধুনিক বাকশালী ব্যবস্থা স্থাপন করেছেন, যেটি ত্রিশ দশকের ফ্যাসিষ্ট নাৎসীবাদের ন্যায় এক রক্তপিপাসু পদ্ধতিরই বহি:প্রকাশ।এখন তিনি গণতন্ত্রকামী জনগনের একক প্লাটফরম বিএনপিকে ফ্যাসিবাদী ভাষায় নিষিদ্ধ করার হুংকার দিচ্ছেন।পৃথিবীর ভয়ংকর একদলীয় একনায়কদের মতোই নির্বাচনী নাটক মঞ্চায়ন করে আজীবন ক্ষমতায় থাকার অভিনব পথে হাঁটছেন। যে পদ্ধতিতে তারা কখনই কোনো নির্বাচনে পরাজিত হন না বা ক্ষমতা হারান না। ২০১৪ সালে, শেখ হাসিনার ফরমুলায় ৩০০ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১৫৪ জনকে ভোটের তারিখের আগেই কৌশলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অটো নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং বাকিরা হয়েছিলেন একতরফা ব্যালটে সিল ছাপ্পড় মেরে। সেই নির্বাচনে কোন ভোটার যায়নি ভোট কেন্দ্রে।
অন্যদিকে ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগের রাতেই ভোট ডাকাতি করে বিশ্বে ভোট ডাকাতির নতুন দৃস্টান্ত স্থাপন করেন। আর এবারে ২০২৪ সালের নির্বাচনে, তিনি শুধুমাত্র তার দল,উচ্ছিষ্টভোগী জোট,গৃহপালিত বিরোধীদল,গোয়েন্দা সংস্থার গড়া নকল দল তথাকথিত কুইন্স পার্টি,ভূইঁফোড় পার্টি,ড্রিঙ্কস পার্টি,ছিন্নমূল পার্টি এবং খুচরা কিছু পার্টি আর শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থীদেরই দিয়েই ভাগ বাটোয়ারার তামাশার নির্বাচনে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।আদতে এই ৩০০ আসনের নির্বাচনে ২ হাজার ২৬০ জন প্রার্থী হলেও ভোটার কেবল একজনই।তিনি খোদ শেখ হাসিনা, যিনি যাদের পছন্দ করবেন তাকেই সিল মোহর দিয়ে দলদাস কাজী হাবিবুল আউয়াল তার আওয়ামী নির্বাচন কমিশনারের মাধ্যমে নির্বাচিত ঘোষনা করবেন।
এই পাতানো আমি-ডামির নির্বাচন জমাতে পারছেনা তারা। বিবিসির প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে,”আগামী ৭ই জানুয়ারি বাংলাদেশে জাতীয় এই নির্বাচনের অনিবার্য ফলাফল কী হবে তা এরই মধ্যে স্পষ্ট।”ভোট বর্জনে সারাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে দেখে আতংকিত শেখ হাসিনাসহ তার পুরো মাফিয়াচক্র।প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এখন লাঠিয়ালের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছেন। কাজী হাবিবুল গতকাল বলেছেন”-বিএনপি নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে ।” তিনি এখন তার খোলস খুলে সরাসরি আওয়ামী লীগের মাফিয়া নেতার রুপ ধারণ করেছেন। আওয়ামী লীগ আর সিইসি যেন সহোদর দুই ভাই।জনগনের ভোট না দেয়ার সাংবিধানিক অধিকার বন্দুকের নলের মুখে হত্যা করতে চান সিইসি।আওয়ামী নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান আতংকে আছেন,তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে সমগ্র বিশ্ব তাকিয়ে আছে। নির্বাচন গ্রহণযোগ্যমূলক করতে না পারলে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে।” তবে এই যে একদলীয় আমরা আর মামুদের পাতানো তামাশার নির্বাচন নাটক করছেন এটা কি সমগ্র বিশ্ব তাকিয়ে দেখছে না ? তাদের কি অন্ধ মনে করেন ? ৭ জানুয়ারীর নির্বাচন গোটা বিশ্ববাসী নিবিড়ভাবে অবলোকন-পর্যবেক্ষন করছে।বাংলাদেশকে আপনারা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছেন।এই ভোট ডাকাত সরকারের পতনের সাথে সাথে আপনাদের রক্ষা করার কেউ থাকবে না।
সুপ্রিয় বন্ধুরা/
১২ কোটি ভোটারের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার সুদৃঢ় অঙ্গীকার ঘোষনা করে আজ দুপুরে ভার্চুয়াল মাধ্যমে এক বক্তৃতায় এই ১২ কোটি মানুষের মুক্তিকামী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন,আপনার-আমার-আপনার পরিবারের সদস্যদের,আমাদের সকলের লুন্ঠিত ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার মাফিয়া সরকারকে সহযোগিতা না করার জন্য বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির পক্ষ থেকে অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। বারোকোটি ভোটারের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। যাদের সাহস এবং সামর্থ্য রয়েছে আপনার আপনাদের লুন্ঠিত ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত চলমান এই আন্দোলনে প্রতিদিনের প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দয়া করে অংশ নিন। যিনি বা যারা নানা সীমাবদ্ধতার কারণে প্রতিদিনের কর্মসূচিতে সরাসরি অংশ নিতে সক্ষম নন, আপনি ৭ জানুয়ারী ভোট ডাকাতির উৎসব ভোট বর্জন করুন। অন্যকে বর্জন করতে উৎসাহিত করুন। এটাই হোক আপনার প্রতিবাদ। এভাবে আপনি,আমি,আমরা প্রত্যেকেই ‘ডামি নির্বাচন কেন্দ্র বর্জন করলে আগামী ৭ জানুয়ারী দেশে ফ্যাসিবাদের কবর রচিত হবে। আওয়ামী লীগ এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার কবল থেকে দেশ এবং জনগণ রক্ষা পাবে। ইনশাআল্লহ ।
বন্ধুরা/
শ্রম আইন লঙ্ঘনের কথিত মামলায় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইনূসকে ফরমায়েশী রায়ে আজ ৬ মাসের কারাদ- দিয়েছেন শেখ হাসিনার আদালত।এই গনভবনের রউায়ে পুরো জাতি লজ্জিত। ফরমায়েশি রায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং ক্ষোভ জানাচ্ছি।প্রতিহিংসার বসবর্তী হয়ে এই রায় যে দেয়া হয়েছে তার প্রমান শেখ হাসিনা অব্যাহত ভাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বিষোদগার এবং তাকে হুমকী দেয়ার ঘটনা প্রমান করে। ২০২২ সালের ১৮ মে এক আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দিয়ে হত্যা করার হুমকী দেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে পদ্মা সেতু থেকে পানিতে ফেলে চুবিয়ে মারার হুমকি দিয়েছিলেন।তখন থেকেই স্পস্ট হয় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে নিয়ে তার গভীর দুরভিসন্ধি করা হচ্ছে। দেশে আওয়ামী লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচারের হোতা,লুটেরা,ব্যাংক ডাকাত,ঋন খেলাফিদের কিছুই হয় না। সম্পূর্ণ সাজানো গোছানো রায়ে সাজা দেয়া হয় ড. মুহাম্মদ ইউনুসের মতো জাতির গর্বকে।
আল্লাহ হাফেজ
কর্মসূচি:
অবৈধ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুণ:প্রতিষ্ঠার একদফা দাবীতে; নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে আগামীকাল ০২ জানুয়ারি (মঙ্গলবার), ৩ জানুয়ারি (বুধবার) ও ৪ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ।
সারাদেশে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ বাহিনী কর্তৃক হামলা, মামলা ও গ্রেফতারের বিবরণ ঃ
মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশী রায়ে সাজা প্রদান ঃ
কামরাঙ্গীচর থানার ২০১৮ সালের একটি মিথ্যা মামলায় (মামলা নং-২৬(৯)১৮) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফারসহ কামরাঙ্গীচর থানার মোট ১২ জন নেতাকর্মীকে আজ ২ বছর করে কারাদন্ড দিয়েছে আদালত নং-৯ এর বিচারক রাজেশ চৌধুরী। এছাড়াও ২০১৮ সালে রাজধানীর কোতয়ালী থানার একটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় (মামলা নং-২২(৯)১৮) গতকাল কোতয়ালী থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম, থানা বিএনপি নেতা- আশরাফুল আমিন, সাঈদ আহমেদ রানাসহ কোতয়ালী থানা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের মোট ৯ জন নেতাকর্মীকে ২ বছর কারাদন্ড দিয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-১৪ এর বিচারক মোঃ মইনুল ইসলাম। আমি এই মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশী রায়ে সাজা বাতিলের জোর আহ্বান জানাচ্ছি।
আজ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী র্যালির প্রস্তুতিকালে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়ে টিয়ার গ্যাস ও ছোড়া গুলি নিক্ষেপ করে সাবেক ছাত্রদল নেতা ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন সেলিম, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রদল নেতা রুবেল আহমেদ চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিল্লুর রহমান, জেলা ছাত্রদল নেতা- আবুল কাশেম, সানি, নাজমুল হক অনি ও ইকবাল হোসেন রোকনসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা এই ধরণের হিং¯্র আক্রমণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
গ্রেফতার ঃ
সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রদল নেতা ইমাম হোসেনকে গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে এবং মুন্সিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান রিপনকে গতকাল লিফলেট বিতরণ শেষে বাসায় ফেরার পথে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তুলে নিয়ে যায়। এখনপর্যন্ত তাদের দুজনের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমি অবিলম্বে তাদেরকে জনসম্মুখে হাজির করার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।
হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. মোঃ এনামুল হক সেলিমকে মারধর করে গুরুতর আহত করে এবং তার গ্রামের বাড়ি থেকে ৩টি মটর সাইকেল জব্দ করে নিয়ে যায় পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য নুরে আলম সিদ্দিকী ও বাঞ্ছারামপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক এমদাদুল হক সাইদসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গতকাল গ্রেফতার করে পুলিশ।
দিনাজপুর জেলাধীন চিরিরবন্দর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুয়েল রানা জিহাদসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আনোয়ারা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমতিয়াজ করিম পিন্টুসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে বিনা কারণে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সিরাজগঞ্জ জেলাধীন এনায়েতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক বিজয় আহমেদকে লিফলেট বিতরণকালে গ্রেফতার করে এনায়েতপুর থানা পুলিশ।
নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজনু চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মাসুম আলীসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ
মৌলভীবাজার জেলাধীন কমলগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের বাসায় গত পরশুদিন বিকাল ৪ টার সময় পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে বাসায় না পেয়ে তার ছোট ভাই ডাক্তার কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় এবং তার ছোট বোনের সাথে অকথ্য ভাষায় কথা বলে পুলিশ। যাওয়ার সময় মাহবুবুর রহমানের বাসায় থাকা ২টি মটর সাইকেল জব্দ করে নিয়ে যায় পুলিশ।
চট্টগ্রাম জেলাধীন আনোয়ারা উপজেলা ছাত্রদল নেতা মোঃ ছোটন চৌধুরীর বাসায় গত পরশুদিন পুলিশ তল্লাশী চালিয়ে তাকে না পেয়ে তার বাবাকে তুলে নিয়ে যায়। চাতুরী চৌমুহনী বাজার দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসীর তোপের মুখে ছোটন চৌধুরীর বাবাকে ছেড়ে যেতে বাধ্য হয় বাকশালী পুলিশ। এছাড়াও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কামরুদ্দিন সবুজের বাসার বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। কারণ জানতে চাইলে বলে উপরের নির্দেশ।
মুন্সিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রিপনসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গত পরশুদিন লিফলেট বিতরণকালে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী-পুর্ব থানা বিএনপির সভাপতি গাজী আমান উল্লাহ আমানসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে বিনা কারণে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জয়পুরহাট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাব্বি শেখ, বম্বু ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা মোঃ হানিফ ও জয়পুরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদল নেতা জাহিদ আল হাসানসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে বিনা কারণে গভীর রাতে তাদের বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম জামাল একটি মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর গত পরশুদিন জামিনে মুক্ত হলে কেন্দ্রীয় কারাগারের মুল ফটক থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে উত্তরা-পশ্চিম থানায় পুণরায় গ্রেফতার দেখিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে।
চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানাধীন ১৪নং সুলতানাবাদ ইউনিয়ন ছাতদলের সহ-সভাপতি শাকিল প্রধান গত ২৮ ডিসেম্বর ঢাকায় আসার পথে মোবাইল চেক করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে থানায় নিয়ে গিয়ে তার কাছে অনেক টাকা দাবী করলে তাৎক্ষণিক সে ১০ হাজার টাকা দিলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।
হামলা, মামলা ও গ্রেফতার ঃ
বাগেরহাট জেলা মহিলা দল বিএনপির লিফলেট বিতরণ করার কারণে জেলা মহিলা দলের সভাপতি শাহিদা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক নার্গিস আক্তারের বাড়িতে গতকাল পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতারের হুমকি দেয় পুলিশ।
নারায়নগঞ্জ জেলাধীন সোনারগাঁও থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল প্রধান, কাচপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সবুজ মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিম হোসেন আলী, সহ-সভাপতি জুয়েল মিয়া ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদ প্রধানসহ ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রায় সকল নেতাকর্মীদের বাড়িতে গতকাল রাত ৮ টার পর থেকে পুলিশ তল্লাশীর নামে বাড়ির আসবাবপত্র ভাংচুর ও পরিবারের সদস্যদের সাথে অনেক দূর্ব্যবহার এবং হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করেছে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন স্বপরিবারে গত পরশুদিন ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় তার শশুর বাড়িতে পারিবারিক কাজে যায়, গতকাল সন্ধ্যা বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ খবর পেযে তাকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে তার শশুর বাড়িতে হানা নিয়ে তাকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং হুমকি-ধামকি দেয়।
মৌলভীবাজার জেলাধীন শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ নুরুল আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ তাজ উদ্দিন তাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাব উদ্দিন, সহ-সভাপতি শামছুল হক, প্রচার সম্পাদক হাফিজুর রহমান তুহিন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সোহেল আহমেদ, পৌর যুবদরের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদির, সহ-সভাপতি মোবারক হোসেন লুপ্পা, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি জালাল উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মোছাব্বির আলী মুন্না, পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার রিমন ও যুবদলের সহ-সভাপতি নিয়ামুল হক তরফদারসহ বেশকয়েকজন নেতাকর্মীদের বাড়ীতে বাড়ীতে পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে হামলা চালিয়ে তাদেরকে না পেয়ে বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও পরিবারের সদস্যদের হুমকি-ধামকি দিয়ে বলছে যে, ৭ জানুয়ারি ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে না গেলে বাড়ির পানি ও বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়া হবে।
জ২০
এপর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী গত ৪৮ ঘন্টায় সারাদেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের
মোট গ্রেফতার : ২৩৫ জনের অধীক নেতাকর্মী।
মোট মামলা : ১২ টি
মোট আসামী : ৯৮৩ জনের অধীক নেতাকর্মী (এজাহার নামীয়সহ অজ্ঞাত)
মোট আহত : ৫৫ জনের অধীক নেতাকর্মী।
এপর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী গত ১৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ নির্বাচনী একতরফা তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত-
মোট গ্রেফতার : ১২৪৪০ জনের অধীক নেতাকর্মী।
মোট মামলা : ৪৪৯ টি
মোট আসামী : ৪৭৬৮৬ জনের অধীক নেতাকর্মী (এজাহার নামীয়সহ অজ্ঞাত)
মোট আহত : ১৮২৭ জনের অধীক নেতাকর্মী।
মোট মৃত্যু : ১৪ জন
২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে মহাসমাবেশের ৪/৫ দিন পূর্ব থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত মোট
গ্রেফতার : ২৪৪৫৫ জনের অধীন নেতাকর্মী
মোট মামলা : ৭১৯ টির অধিক
মোট আহত : ৭০৫০ জনের অধিক নেতাকর্মী
মৃত্যু : ২৭ জন (সাংবাদিক ১ জন)
গত ২৮ ও ২৯ জুলাই ২০২৩ তারিখ হতে অদ্যাবধি বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারাদেশের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ঃ-
মোট গ্রেফতার : ২৭৪৩৬ জন
মোট মামলা : ১১২০ টির অধিক
মোট আসামী : ১০০৩৬৪ জন
মোট আহত : ৯৪৫৪ জনের অধীক নেতাকর্মী
মোট মৃত্যু : ২৭ জন (সাংবাদিক ০১ জন)
মিথ্যা মামলায় সাজা : মোট ৮৪ টি মামলায়ঃ ৯ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ ও প্রায় ১২৯৪ জনের
অধিক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি