ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ১১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন বা এক হাজার ১১৪ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় এক লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২৩৩ কোটি ডলার বা ২৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি। একক মাস হিসেবে গত নভেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ২২০ কোটি ডলার। এভাবে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক উন্নতি হচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রেমিট্যান্সের পাশাপাশি রপ্তানি আয়ও বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে এক হাজার ৫৭৯ কোটি ডলারের রপ্তানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বৃদ্ধির ফলে ডলার বাজারে অস্বস্তি কমতে শুরু করেছে।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে ডলারের দর ১২০ টাকায় স্থিতিশীল আছে। এর আগে আমদানিকারকদের যেখানে প্রতি ডলার ১২৫ টাকা পর্যন্ত কিনতে হচ্ছিল। এছাড়া গত নভেম্বর মাসে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) সেপ্টেম্বর–অক্টোবর সময়ের জন্য ১৫০ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়। এরপর রিজার্ভ কমে গত ১১ নভেম্বর ১৮ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। সেখান থেকে আবার বেড়ে ১৮ দশমিক ৭৪ বিলিয়নে উঠেছে। দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়িয়েছিল ২০২১ সালের আগস্টে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা সমকালকে বলেন, বর্তমান সরকার আর্থিক খাত সংস্কারে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। অর্থপাচার রোধ এবং আগে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ চলমান আছে। এর মধ্যে গত আগস্ট থেকে টানা চার মাসে গড়ে ২ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স ১১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এ সময়ে রপ্তানি আয়েও ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এর ফলে ডলার বাজারে এখন আর আগের মতো অস্থিরতা নেই।
ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পতন হয়। এর আগে সরকারকে অসহযোগিতার জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠাতে ব্যাপক ক্যাম্পেইন চলছিল। আবার আন্দোলন দমনের জন্য তখন বেশ কয়েকদিন ব্যাংকসহ সব ধরনের অফিস বন্ধ রাখা হয়। এসব কারণে জুলাইতে রেমিট্যান্স কমে ১৯১ কোটি ডলারে নেমে যায়। এর আগে গত মে মাসে আইএমএফের পরামর্শে এক লাফে প্রতি ডলারে ৭ টাকা বাড়িয়ে মধ্যবর্তী দর ১১৭ টাকা করার পর থেকে রেমিট্যান্স দ্রুত বাড়ছিল।