বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান এ্যাডঃ কাজী রেজাউল হোসেন বলেছেন, জুলাই বিপ্লবে আত্মাহুতি দেয়া সহস্র প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া নতুন বাংলাদেশকে নতুন করে সাজাতে হবে। তাদের রক্তের প্রতিদান তখনই দেয়া হবে যখন দেশ থেকে সকল প্রকার দুর্নীতি ও বৈষ্যম্যের মূলোৎপাটন ঘটবে। আর যদি আমরা গতানুগতিক ধারায় দেশে দুর্নীতি ও বৈষম্য জিইয়ে রাখি তাহলে শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানী করা হবে। স্বৈরশাসনের পতনের পর দেশে যা হচ্ছে তা কোনভাবেই কাম্য ছিল না। প্রশাসন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জবরদস্তি এবং ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজির যে নতুন মহোৎসব শুরু হয়েছে তা জাতির জন্য ভাল বার্তা বহন করে না।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের কর্মী শহীদ মনজু মিয়ার স্মরণে আয়োজিত শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তৃতায় উপরোক্ত কথাগুলো বলেন এ্যাডঃ কাজী রেজাউল হোসেন। শহীদ মনজু মিয়ার বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার জুয়ান গ্রামে। তিনি গাজীপুর জেলার গাছা থানাধীন জয়বাংলা রোড এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ২০ জুলাই গাজীপুর এলাকায় মিছিলে অংশ নিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। পরে তাকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ভূমিহীন মনজু মিয়ার মৃত্যতে তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে পিতার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। অবিলম্বে তাকে যথাযথ সহযোগিতা করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয় শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহাসচিব এ্যাডঃ মোঃ ইয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় আজ শুক্রবার বিকালে দলের বাংলামটরস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে অতিথি হিসেবে ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রেজায়ী রাব্বি জায়েদ এবং আন্দোলনের সংগঠক ওয়াহিদ সাকিব, সিদ্দিকুর রহমান খোরশেদ ও নাঈম হোসেন।
শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, স্বৈরাচারের পতনের পর দেশবাসী আশা করেছিল দেশে স্থিতিশীলনা ফিরে আসবে, শান্তি ফিরে আসবে। কিন্তু কিছু কুচক্রি মহলের কারণে দেশে একের পর অস্থিরতা তৈরী হচ্ছে। শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। চারিদিকে চাঁদাবাজি, আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া, পিটিয়ে হত্যা ও জোরজবরদস্তি করে জমি-জমা ও ব্যবসা প্রতিণ্ঠান দখল করা হচ্ছে। আইন-শৃংখলা বাহিনী ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না। ফলে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনীকে রাস্তায় নামাতে হচ্ছে। এমন দেশের জন্য রক্ত দেয়নি মনজু মিয়াসহ হাজারো শহীদরা। বক্তারা আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের জন্য ৩০ লাখ এবং পঙ্গুত্ব বরণকারীদের পরিবারের জন্য ১৫ লাখ টাকা দ্রুত বরাদ্দের আহবান জানান।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডঃ মোঃ আব্দুল আওয়াল, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিব সম্পাদক মোঃ নাজমুল মোর্শেদ, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পদক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বাবলু, দপ্তর সম্পাদক মোঃ তুষার রহমান, কৃষি, খাদ্য ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোঃ তোফায়েল আহমেদ, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আজিজুল হক সুমন, যুগ্ম অর্থ সম্পাদক মোঃ রেদোয়ন হোসেন, যুগ্ম সাহিত্য ও সাংষ্কৃতিক সম্পাদক মোঃ হাসান শেঠ, শ্রমিক কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সদস্য সেলিম রেজা বাচ্চু শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।