ঢাকাআওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও তিনটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিভিন্ন আদালতে মামলাগুলো দায়ের করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী ও আশুলিয়ায় গুলিতে তিনজন নিহতের ঘটনায় এসব মামলা করা হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুটি এবং ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা হয়। তিনটি মামলায় আসামি করা হয়েছে মোট ৪০৩ জনকে।
দুলাল হত্যা
রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় দুলাল সরদার নামে একজনের মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালতে শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে বাড্ডা থানা-পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এ মামলায় উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন—ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, রমেশ চন্দ্র সেন ও লতিফ মোল্লা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৮ জুলাই সকাল ১০টায় বাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সামনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা আন্দোলনের সমর্থনে মিছিল করেন। তখন শেখ হাসিনার নির্দেশে অন্য আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুলাল সরদার মারা যান।
হান্নান হত্যা
শেখ হাসিনাসহ ২৩৭ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় আব্দুল হান্নান নামে একজনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালতে নিহতের শ্যালক দিপুকুল ইসলাম দিপু বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করে এ ঘটনায় অন্য কোনো মামলা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখে যাত্রাবাড়ী থানাকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন—ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, শামীম ওসমান, রাজিবুল ইসলাম রাজিব ও মশিউর রহমান মোল্লা সজল।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় ছাত্র-জনতা মিছিল করছিল। শেখ হাসিনার নির্দেশে অন্য আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে হান্নান মারা যান।
তৌহিদুর হত্যা
শেখ হাসিনাসহ ১২১ জনের বিরুদ্ধে সাভারের আশুলিয়ায় তৌহিদুর রহমান রানা নামে একজনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগমের আদালতে জাহিদ হাসান বাদী হয়ে মামলা করেন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আশুলিয়া থানা-পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন—ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডা. এনামুর রহমান, পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ হিল কাফি ও আরাফাত হোসেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট বিকেল ৪টার দিকে আশুলিয়া থানাধীন এলাকায় তৌহিদুর রহমান রানা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। শেখ হাসিনাসহ আরজিতে বর্ণিত অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।