সাকিব আল হাসান মানেই যেন বিতর্ক আর সমালোচনা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের খুব কম সময়ই এই বিতর্ক আর সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে চলতে পেরেছিলেন টাইগার এ ক্রিকেটার। নানা উত্থান-পতন আর বিতর্কের পরেও বাংলাদেশের ক্রিকেটে নিজেকে সাকিব স্থাপন করেছিলেন রেকর্ডের বরপুত্র হিসেবে।
Advertisement
চেন্নাইতে সর্বশেষ টেস্ট খেলার সময়েও পেয়েছেন বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলা সবচেয়ে বেশি বয়সি টেস্ট খেলুড়ে ক্রিকেটারের খেতাবও।
তবে কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টের ঠিক আগেই নিজের সমাপ্তির বার্তাটা দিয়ে দিলেন সাকিব। শুক্রবার থেকে টেস্ট শুরু হওয়ার আগেই আজ জানালেন, দেশের মাটি থেকেই বিদায় নিতে চান টেস্ট ক্রিকেটের ফরম্যাটে।
অবসর ঘোষণার পরেই ছিল সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর। সেখানেই উঠে এলো হত্যা মামলা আর শেয়ারবাজার কারসাজির কথাও। এতসব চাপের পর খেলা চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন বলেই জানালেন সাকিব।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের পর অবশ্য খানিকটা প্রশ্ন তুলেছেন সেসব মামলার প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও। সাকিব বলেন, ‘একটা কেইস (হত্যা মামলা) হয়েছে, সবারই রাইটস (অধিকার) আছে। বাট আপনারা সবাই জানেন, এটা কেমন ধরণের কেইস ছিল। আমি ওই সময় কোথায় ছিলাম। আমার কাজ কী ছিল কিংবা আমি কী করছিলাম। সো এ বিষয়টা নিয়ে খুব বেশি কিছু বলতে চাই না।’
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সাকিব ব্যস্ত ছিলেন কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে। তবে তাকে আদাবরে গার্মেন্টসকর্মী হত্যা মামলার আসামি করা হয়।
এছাড়াও অবশ্য নিজ থেকেই কথা বলেছেন শেয়ারবাজার কারসাজি নিয়ে। যেখানে তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সে প্রসঙ্গে সাকিবের বক্তব্য, ‘আমার লাইফে আমি নিজে থেকে কোনো ট্রেড করিনি। কেউ যদি এটা বলে আমি ট্রেডিং করেছি, আমাকে প্রমাণ দিলে আমি খুশি হবো। এ সবগুলোই এখন যে কেউ যার যার মতো করতেই পারে। তবে বিষয়গুলো যদি একটু সুন্দরভাবে করতো, আমার জন্য হয়তো ভালো হতো। আমার জন্য মেন্টালি সহজ হতো।’
এ সময় তার নামে দেওয়া অভিযোগগুলোকে মিথ্যা বলেও উল্লেখ করেছেন সাকিব, ‘মিথ্যা অভিযোগগুলো আমার মনে হয় না খুব একটা ভালো দিক বহন করে, আমাদের দেশের জন্য বা বাইরের জন্য। কারণ বাইরের মানুষগুলো যখন কথা বলবে, তখন আমার মনে হয় না জিনিসগুলো অ্যাপ্রোপিয়েট হবে। আমার লাইফে যখন আমি কোনো ট্রেডই করিনি নিজ থেকে, তাই স্বাভাবিকভাবেই আমার ভুল করা বা যেসব শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, সেসবও কতটা যথার্থ, তা (চিন্তা করা) আমার জন্য দুঃখজনক।’
এদিকে টেস্ট ও টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেও ওয়ানডেতে খেলা চালিয়ে যাবেন সাকিব। গুঞ্জন আছে, আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে তিন ফরম্যাট থেকেই অবসরে যাবেন সাকিব। তার আগ পর্যন্ত শুধু ওয়ানডেতে দেখা যাবে এ অলরাউন্ডারকে। তবে নিয়মিত তাকে পাওয়া নিয়েও থাকছে শঙ্কা।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছাড়লেও ঘরোয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলবেন সাকিব। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) কিংবা বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতেও দেখা যাবে দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকাকে।