ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল (ঢাবি) তে ছাত্ররাজনীতি ইস্যুতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আলোচনার অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে সক্রীয় বিভিন্ন ছাত্ররাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও আলোচনায় বসেন তারা।
আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লাউঞ্জে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এক দীর্ঘ পোষ্টের মাধ্যমে তার সাংগঠনিক পরিচয় তুলে ধরেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি ইস্যুতে ছাত্রশিবিরের অবস্থান স্পষ্ট করেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ১৬ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) তে প্রকাশ্যে আসলো ছাত্রশিবির।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লেখেন, “আমরা জানি এই স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছে রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট এবং দলের আওতামুক্ত রাজনীতি সচেতন ছাত্র-জনতা। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানোর চেয়ে বড় রাজনীতি আর কোন রাজনীতিই না। আমরা চাই সেই রাজনীতির আদর্শে ছাত্ররাজনীতির ব্যাপক ইতিবাচক সংস্কার হবে। ভবিষ্যতের ছাত্ররাজনীতিতে মত-দ্বিমত হবে, যুক্তির পাথরে সবাই বিক্ষিপ্ত হবে, কিন্তু কোন হকিস্টিক কিংবা স্ট্যাম্প থাকবে না। কোনো গেস্টরুম, গণরুম থাকবে না। চব্বিশের আকাঙ্ক্ষাকে বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে এই ছাত্ররাজনীতি। মধুতে ভিন্নমতের কেউ চা খেলে অপর পক্ষের কেউ তেড়ে আসবে না। একাডেমিক পরিবেশে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে ছাত্রসংসদ ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি।
গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমতের প্রতি থাকবে সম্মান কিন্তু কেউ যেন স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারে রাখতে হবে সজাগ ও পূর্ণ দৃষ্টি। এই রাজনৈতিক সংস্কারে অবশ্যই চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, তা না হলে ভেস্তে যাবে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমরা চাই ছাত্ররাজনীতির সংস্কার গবেষণা, পলিসি ডায়ালগের মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়িত হোক। এ লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”
বিগত সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংগঠনের বিভিন্ন প্রোগ্রামগুলোতে ছাত্রশিবিরের কোনো নেতাকে সাংগঠনিক পরিচয়ে প্রকাশ্যে রাজনীতির মঞ্চে দেখা যায়নি। আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের প্রকাশ্যে আসার মাধ্যমে সুদীর্ঘ ১৬ বছরের আত্মগোপনে ক্যাম্পাস রাজনীতির যুগের সমাপ্তি হলো।