মহসিন হোসেন, সাতক্ষীরা থেকে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আর বেগম খালেদা জিয়ার প্রদর্শিত মানুষের উন্নয়ন ও কল্যানের রাজনীতিই হবে বিএনপির রাজনৈতিক অনুপ্রেরণা – আজ রোববার বিকালে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা ফুটবল মাঠে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত লক্ষ মানুষের সমাবেশে এক বিশাল জনসভায় একথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, আপনারা সবাই গত সতের বছর ধরে শেখ হাসিনা ও তার আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে সীমাহীন ভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। গত দেড় যুগ ধরে গুম খুন নির্যাতন, জমি বাড়ী দখল, ব্যবসা নষ্ট করা থেকে শুরু করে এমন কোন অপকর্ম নেই যা তারা করেনি, আজ শেখ হাসিনা ও তার দলবলকে কেমন অপমান জনক ভাবে পালাতে হয়েছে সেটাও আপনারা দেখেছেন।
-তিনি আরও বলেন, আমি এটাও জানি আপনারই আমের মৌসুমে সারা দেশে আপনাদের বাগান থেকে সর্বপ্রথম ক্ষীরসাপাতি, ল্যাংড়া আম দেশের মানুষের কাছে পৌছে দেন।
আপনাদের থেকে প্রায় ৬০০০ মাইল দূরে থাকলেও আমি আমার অন্তর দিয়ে সবসময়ই আপনাদের দেখতে পাই।
বিগত সতেরো বছর ধরে দেশের আর সবার মতই আপনারাও স্বৈরাচারী হাসিনার দেয়া নিদারুণ কষ্ট আর যন্ত্রণা সহ্য করেছেন।
– জেল জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছেন, প্রান ভরে কথা বলতে পারেন নি, ঠিক মত ব্যবসা বানিজ্য করতে পারেন নি আওয়ামী চাঁদাবাজের অত্যাচারে
– এখানে বড় কোন শিল্প কারখানা কিছুই নাই, নেই বেকারদের চাকরী।
– এখানে আমের মৌসুমের সবচাইতে প্রথমে আম উৎপাদন হলেও এখানে আম সংরক্ষণ বা আমের রস কিম্বা আচার চাটনীর কোন কারখানা নাই। অথচ দেশে নাকি উন্নয়নের আর কিছু নাকি বাকী নাই।
– আমি জানি আপনারা নিজেদের শ্রম আর বুদ্ধি দিয়ে এখানে ছাদের জন্য অসাধারণ সুন্দর মাটির টালি তৈরি করেন, সেটা ইটালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানিও হয় কিন্তু এগুলো আরো সামনে এগিয়ে নিতে কোন বড় কারখানা বানানোর কোন চেষ্টা নাই সরকারের।
– মুন্সিগঞ্জ উপজিলায় ছোট ছোট কয়েকটি রিসোর্ট আছে কিন্তু দেশের মানুষ জানেই না সেটার কথা আর যোগাযোগও ভালো না।
– আমাদের মা-বোনেরা যারা মাটির টাইলস বানান, সূযোগ পেলে তাঁরা আরও বিভিন্ন রকম কুটির শিল্প গড়ে তুলতে পারেন।
– আর যাদের কিছু চিংড়ি বা মাছের ঘের আছে তারা সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকেন আকাশে কালো মেঘ দেখলেই, কখন বুঝি আজ থেকে ৭০ বছর আগে তৈরী বেড়িবাঁধ সামান্য বৃষ্টি বা প্লাবনেই ভেঙে যায়, মেরামতের জন্য টাকা লুটপাট ছাড়া আর কিছু হয় না। ফলে মাঠ লবনাক্ত হয়ে ফসল হয় না, আর ঘেরের মাছ ভেসে যায়, চাষি মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে।
পর্যটন ছাড়াও এত বড় সুন্দর বনের বিরাট সম্ভবনা থাকলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এর সামন্যই আমাদের কাজে লাগছে।
এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে, প্রতিটি এলাকার সমস্যা আর অর্থনৈতিক সম্ভবনার বিষয় মাথায় রেখে পরিকল্পিত ভাবে আগামীতে উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণে তার ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেন।
প্রিয় বন্ধুরা, সবশেষে বলি, গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম আমাদের শেষ হয়নি। অনেক কাজ বাকী সতর্ক হতে হবে, এখান চেনা শত্রুর সাথে প্রতিবেশী দেশের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়েছে দেশের কিছু রাজনৈতিক দল। তারা আপনাদের আশেপাশেই তারা আছে সতর্ক থাকুন, নিজেদের বুদ্ধি বিবেচনা দিয়ে তাদের মোকাবিলা করুন।
তিনি বলেন গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন অব্যহত আছে এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যহত ঘাকবে।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন সদ্য কারামুক্ত সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব। বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলম, সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দীন, শাহানারা আক্তার বকুল, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তারিকুল হাসান, আইনুল ইসলাম নান্টা প্রমুখ।