ঢাকা: আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা যাতে কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ না করে সে জন্য তাদেরকে সতর্ক করেছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দলকে কুক্ষিগত করে না রেখে সবাইকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সংসদ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারি দল আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় বৃহস্পতিবার (২ মে) তিনি এ নির্দেশ দেন। জাতীয় সংসদ ভবনের সরকারি দলের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপজেলা নির্বাচন ছাড়াও সংসদ নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদ নির্বাচনের থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আরো বেশি অংশগ্রহণমূলক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। সভা শেষে আওয়ামী লীগের কয়েকজন সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।
সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের উচিত না তাদের সন্তানদের, আত্মীয়স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করা।
দলের অন্য যারা আছে, যারা দলের জন্য কাজ করে, সবাইকে সুযোগ করে দেওয়া উচিত। সব কিছু নিজের পরিবারের মধ্যে রাখা যাবে না, একাই সব জায়গায় থাকার মানষিকতা ছাড়তে হবে। আওয়ামী লীগ পরিবারকে বড় করতে হবে, দলকে নিজের কুক্ষিগত, সংকীর্ণ করে রাখলে হবে না। নির্বাচনে যেন কোনো সমস্যা না হয়, নির্বাচনটা যাতে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হয় সে দিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আমি শুনেছি কিছু স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ঝামেলা করছে। আমি স্বতন্ত্র সদস্যদের সঙ্গেও বসব, তাদের সঙ্গেও কথা বলব।’
সুত্র জানায়, আভ্যন্তরিক দ্বন্দ্বে না জড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘গত নির্বাচনে যারা স্বতন্ত্রদের পক্ষে ছিল, তাদের ওপর দলের এমপির লোকরা চড়াও হচ্ছে। আবার স্বতন্ত্র যারা এমপি রয়েছে তারা দলের প্রার্থীর পক্ষে যারা ছিল তাদের ওপর চড়াও হচ্ছে। এ ধরণের আভ্যন্তরিক দ্বন্দ্ব, কোন্দল বন্ধ করতে হবে।
বিশেষ পরিস্থিতির কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তারা ভোট করেছে। অনেকে নির্বাচিত হয়েছে, অনেকে পারে নাই। কিন্তু এ নিয়ে সংঘাত-সহিংসতা মেনে নেওয়া হবে না। দলের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবব্ধ থাকতে হবে, সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, ‘সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয় সে জন্য সংসদ সদস্যদের তদারকি করতে হবে। আমরা যে উন্নয়ন করেছি, সে সুফল যাতে জনগণ পায় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
খাদ্য উৎপাদনের ওপর আবারও তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক খণ্ড জমিও ফেলে রাখা যাবে না। উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে।’
দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের পূর্ব শর্ত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকা। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে সে দিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমি এ বিষয়টি নিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য, অন্য দলের সংসদ সদস্য ও অন্যান্য দলের সঙ্গে কথা বলব। এ সব বিষয় নিয়ে আমি তাদের সঙ্গে বসব।’ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন তিনি। সুত্র: কালের কণ্ঠ