ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতে নিখোঁজ থাকা ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার সে দেশে খুন হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার নিউ টাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাটে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে বলে তথ্য দিয়েছে পুলিশ। বুধবার এমন নজিরবিহীন ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
দেশের কোনো সংসদ সদস্যের বিদেশে খুন হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।
এর আগে ভোরে পূর্ব কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে এমপি আনারের রক্তমাখা জামা উদ্ধার করা হয়। তবে তার মরদেহ উদ্ধার করা যায়নি। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের বরাত দিয়ে দেশের গোয়েন্দারা বলছেন, আনারের লাশ কয়েক খণ্ড করে গুম করা হয়ে থাকতে পারে।
হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করেছে। তাদের ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তারা সম্প্রতি কলকাতা থেকে ফিরেছেন। তাছাড়া তদন্তকারী সংস্থাগুলো তথ্য পেয়েছে, দুদিন আগে সন্দেহভাজন একজন কৌশলে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন। ওই ব্যক্তি কলকাতা থেকে ঝিনাইদহ হয়ে ঢাকায় এসেছিলেন।
খুনের নেপথ্যে সোনা চোরাচালান ও হুন্ডি ব্যবসার বিরোধসহ নানা কারণ খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। তারা বলছেন, আনার খুনে অংশ নিয়েছিল এক নারীসহ পাঁচজন। তাদের মধ্যে সৈয়দ আমানুল্লাহ সাঈদ, সেলে নিস্কি রহমান ও জাহিদ নামে তিনজন ঢাকার ডিবি ও অন্য দুজন কলকাতা পুলিশের হাতে আটক হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, খুনের মূলহোতা পুলিশের হেফাজতে আছেন।
আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন তার বাবার হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, কলকাতা পুলিশ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানিয়েছে, ১৩ মে এমপি আনার নিউটাউনে যে ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন, সেখানে একজন নারীসহ পাঁচজন প্রবেশ করেছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। কলকাতা পুলিশ ফ্ল্যাটসহ আশপাশের এলাকার ক্লোজ সার্কিট (সিসি) টিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। ইতিমধ্যে ফুটেজে বাংলাদেশের পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানায়। তাছাড়া পুলিশের একটি টিম কলকাতায় গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, চিকিৎসা করাতে যাওয়ার কথা বলে ভারতে গিয়েছিলেন এমপি আনার। তিনি চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে একাই ভারতে গিয়েছেন। গত ১২ মে কলকাতার বরাহনগর এলাকায় তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন তিনি। ১৩ মের পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে গত ১৮ মে কলকাতার বরাহনগর থানায় একটি নিখোঁজের ডায়েরি করেন ১৭/৩ মণ্ডলপাড়া লেনের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি। গোপাল এমপি আনারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। গোপাল বিশ্বাস জিডিতে উল্লেখ করেন, ‘আনোয়ারুল আজিমের সঙ্গে তার ২৫ বছর ধরে পারিবারিক সম্পর্ক। ১২ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আনোয়ারুল আজিম কলকাতার মণ্ডলপাড়া লেনে তার (গোপাল বিশ্বাস) বাড়িতে আসেন। তিনি কলকাতায় আসেন ডাক্তার দেখাতে। পরদিন (১৩ মে) স্থানীয় সময় (কলকাতা) দুপুর পৌনে ২টার দিকে ডাক্তার দেখানোর জন্য গোপাল বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বের হন আনোয়ারুল আজিম। যাওয়ার সময় তিনি (আনোয়ারুল) বলে যান, দুপুরে খাবেন না। সন্ধ্যায় ফিরে আসবেন। পরে তিনি কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে এসে নিজেই গাড়ি ডেকে চলে যান।’
জিডির তথ্য অনুযায়ী, এমপি আনার সন্ধ্যায় গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ফেরেননি। তিনি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে গোপালকে একটি বার্তা পাঠিয়ে জানান, বিশেষ কাজে তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। সেখানে পৌঁছে তিনি ফোন করবেন, তাকে ফোন করার দরকার নেই। পরে ১৫ মে স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ২১ মিনিটে এমপি আনারের নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে আরেকটি বার্তা আসে। তাতে দিল্লি পৌঁছানোর কথা জানিয়ে বলা হয়, ‘আমার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন, ফোন করার দরকার নেই।’ তার নম্বর থেকে একই বার্তা বাংলাদেশে তার বাড়ির লোকজন এবং ব্যক্তিগত সহকারীকে পাঠানো হয়। ১৬ মে তার নম্বর থেকে তার ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রউফের নম্বরে একটি ফোন আসে বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বলা হয়, ব্যক্তিগত সহকারী ফোন ধরতে পারেননি। পরে আনারকে তিনি (ব্যক্তিগত সহকারী) ফোন করেও আর যোগাযোগ করতে পারেননি। পরদিন ১৭ মে আনারের মেয়ে গোপাল বিশ্বাসকে ফোন করে জানান, তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তারপর তিনি কলকাতায় আনারের যারা পরিচিত আছেন তাদের ফোন করেন। কিন্তু তার কোনো সন্ধান মেলেনি। গত মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের উপকমিশনার (বারাকপুর দক্ষিণ) অনুপম সিং সাংবাদিকদের বলেন, আনোয়ারুল আজিমের বিষয়ে এখনো কোনো কিছু তারা জানতে পারেননি। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দপ্তরের (আইবি) সূত্র বলেছে, গত চার-পাঁচ দিনে আনোয়ারুল আজিমের মোবাইল ফোন দুবার সচল হয়েছে। আসাম ও উত্তর প্রদেশে এগুলোর অবস্থান দেখা গেছে।
লাশ টুকরো টুকরো করে ছড়িয়ে দিয়েছে : গতকাল ভোরে নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন নামের আবাসিক এলাকায় যে ফ্ল্যাটে এমপি আনার উঠেছিলেন, সেখানে রক্তের দাগ মিলেছে। সেখান থেকে ফিঙ্গার প্রিন্টসহ ফরেনসিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ফ্ল্যাটটির মালিক পশ্চিমবঙ্গে সরকারের শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার রায়। তার কাছ থেকে আখতারুজ্জামান নামের বাংলাদেশি এক ব্যক্তি ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন। ফ্ল্যাটটিতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে প্লাস্টিকের কিছু ব্যাগ পেয়েছে। এ ছাড়া ওই বাড়ির সামনে থেকে একটি লাল রঙের গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। গাড়িটিতে করে দুই ব্যক্তিকে সেখানে আসতে দেখা গিয়েছিল।
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, এমপি আনার গোপাল বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বের হয়ে যে ট্যাক্সি ক্যাবে উঠেছিলেন, সেই চালককে আটক করা হয়েছে। কলকাতা বিধাননগর পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মানব শ্রিংলা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদে ক্যাবচালক জানিয়েছেন, ১৩ মে যে ব্যক্তিকে তিনি গাড়িতে তুলেছিলেন তাকে হত্যার পর টুকরো টুকরো করে লাশ ছড়িয়ে দিয়েছেন। যে ফ্ল্যাটে ঘটনা ঘটেছে সেখানে তিনজনকে ঢুকতে দেখা গেছে সিসিটিভি ফুটেজে। তাদের মধ্যে একজন মহিলা। তবে ওই তিনজনকে সেখান থেকে বের হতে দেখা গেলেও আনারকে আর দেখা যায়নি।
পুলিশে বিভ্রান্ত করতে মোবাইল লোকেশন : এমপি আনারকে হত্যার পর তার মোবাইল নিজেদের কবজায় নিয়ে নেয় খুনিরা। তারা মোবাইল থেকে বিভিন্নজনকে মেসেজ পাঠাতে তাকে। এ ছাড়া এমপি আনারের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ আছে এমন কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার কাছেও মেসেজ দেওয়া হয় তার মোবাইলে। মূলত পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে হত্যাকারীরা এসব মেসেজ দেয়।
সন্দেহে গোপাল বিশ্বাস : এমপি আনার হত্যা মামলার সন্দেহভাজন হিসেবে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের নামও এসেছে। গোপাল বিশ^াস একসময় হতদরিদ্র ছিলেন। আনারের টাকায় তিনি জুয়েলারি ব্যবসা শুরু করেন। জুয়েলারি ব্যবসায় তার পাঁচতলা বাড়িসহ ব্যাপক উন্নতি হয়। ওই অর্থের সবই আনারের ছিল বলে ঝিনাইদহের স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
অপহরণ ও হত্যা মামলা : গতকাল সন্ধ্যায় আনারকে অপহরণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেছে তার পরিবার। শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহাদ আলী জানান, আনারের ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন মামলা করেছেন। মামলাটি নথিভুক্ত হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার এইচএম আজিমুল হক জানান, এমপি আনার সংসদ ভবন এলাকায় থাকতেন। সেখান থেকে তিনি ভারতে গেছেন। তাই গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান হারুন অর রশিদের পরামর্শে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তার মেয়ে।
এদিকে গতকাল আনারের মেয়ে ডরিন কয়েকজন স্বজন নিয়ে কলকাতায় গেছেন। লাশ নিয়ে তিনি দেশে আসবেন বলে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ডিবির একটি টিম কলকাতায় গেছে। তারা কলকাতা পুলিশের সঙ্গে কথা বলবে।
যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন সন্দেহভাজন একজন : হত্যাকা-ে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে এমন একজন দুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে পুলিশ তথ্য পেয়েছে। ইতিমধ্যে ওই ব্যক্তির প্রোফাইল সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি ভারত থেকে এসে ঝিনাইদহ যান। সেখান থেকে ঢাকায় এসে দেশত্যাগ করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বলে জানা গেছে। এ ছাড়া কলকাতায় সঞ্জিভা গার্ডেনসের যে ফ্ল্যাটে আনার খুন হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ফ্ল্যাটের ভাড়াটে এ সন্দেহভাজন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও ডিবির প্রধান যা বললেন : আনার হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ‘আমরা আরও কয়েকজনকে ধরার চেষ্টায় আছি। এটা খুন, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরবে, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। কারণ, ভারতের কেউ এখানে জড়িত থাকার খবর পাইনি। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, তাতে আমাদের দেশের মানুষই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।’
গতকাল ঢাকায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘খুনের উদ্দেশ্য, কারা খুন করেছে, এসব জানতে ভারতের পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনায় দেশে আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে। যারা এ খুনের সঙ্গে জড়িত, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল, আমরা পরে সেগুলো প্রকাশ করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঝিনাইদহের ওই এলাকাটি অত্যন্ত সন্ত্রাসপ্রবণ সীমান্ত এলাকা। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে। আমরা শিগগিরই খুনের মোটিভ কী ছিল সেটি জানাব। ভারতীয় পুলিশ আমাদের সহায়তা করছে। তবে আমরা আপনাদের নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি, তিনি কলকাতার নিউ টাউনে খুন হয়েছেন। একটি বাসায় তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।’ মরদেহ কবে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আনারের মরদেহ এখন কোথায় রয়েছে সেটি আমরা জানতে পারিনি। আমাদের কাছে যেসব সংবাদ রয়েছে, সেসবের ভিত্তিতে কাজ করছি।’
এর আগে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকায় বৌদ্ধবিহার অনুষ্ঠানে যান আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কলকাতা পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশ একসঙ্গে কাজ করছে।
এমপি আনারের বিরুদ্ধে হুন্ডি, সোনা চোরাচালানসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘এসব বিষয়ে এখন মন্তব্য করার সময় নয়। তবে এ অভিযোগগুলো আমরা সামনে নিয়ে তদন্ত করছি।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে ডিএমপি ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, এমপি আনারকে কেন হত্যা করা হয়েছে জানতে আমাদের তদন্ত চলছে। এটা পারিবারিক নাকি আর্থিক অথবা এলাকায় কোনো দুর্বৃত্তদের দমন করার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে কি না, সবকিছু আমরা তদন্ত করব।’
‘আমি এর শেষ দেখতে চাই’ : এমপি আনার হত্যাকা-ের বিচার চেয়ে তার ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেছেন, ‘আমি এর শেষ দেখতে চাই, তারা কেন বাবাকে হত্যা করেছে? আমি বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু দেখে যেতে চাই।’
বাবাকে হারিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কথাগুলো বলেন তিনি। গতকাল ভারতের বাবার মৃত্যুর খবর শুনে দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে যান ডরিন। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। বিকেলে তিনি চলে যান কলকাতায়।
ডরিন বলেন, ‘আমার কোনো ভাই নেই। আমরা দুই বোন। বড় বোন ডাক্তার। আমি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে এলএলবি ফাইনাল পড়ছি।’
আপনি কাউকে সন্দেহ করছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যাদের পুলিশ আটক করেছে তাদের আমি চিনি না, কিন্তু চিনতে চাই। আমি হারুন আঙ্কেলকে বলেছি, আপনি আইডেনটিফাই করুন, কেন এই রকমটি হলো।’
বাবার সঙ্গে আপনার বা পরিবারের সর্বশেষ কী কথা হয়েছিল জানতে চাইলে ডরিন বলেন, ‘আমার সঙ্গে বাবার সর্বশেষ ভিডিও কলে কথা হয়েছে। বলেছে, আম্মু আমি ইন্ডিয়ায় যাচ্ছি। দুই-এক দিনের মধ্যে চলে আসব। তোমার দাঁতের ডাক্তারের কাছে দেখানোর কথা। আমি ফিরে এসে তোমাকে দাঁতের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব, তুমি যেও না। তুমি থাকো আমি আসছি। তারপর আর বাবার সঙ্গে কথা হয়নি।’ সুত্র: দেশ রুপান্তর