মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ১২:৫২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনামঃ
বাংলাদেশকে হারিয়ে আরব আমিরাতের ইতিহাস নামাজের শিক্ষা ব্যক্তি,পরিবার ও রাষ্ট্র গঠনে আত্মনিয়োগ করতে হবে: ডা. শফিকুর রহমান শেকৃবিতে সাদা দলের সভাপতি অধ্যাপক আবুল বাশার, সম্পাদক ড. নূর মহল বানু তারেক রহমান দেশে ফিরে নেতৃত্ব দেবেন: মোস্তফা জামান খেলাধুলায় বহির্বিশ্বে যারা দেশকে রিপ্রেজেন্ট করবে, তাদের দায়-দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে: তারেক রহমান মাইক্রোক্রেডিটকে এনজিও’র ধারণা থেকে বেরিয়ে ব্যাংকিংয়ের ধারণাকে গ্রহণ করতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা বাকশালীরা গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করেছে: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ফুটপাতে দাড়িয়ে চা পান করলেন রিজভী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা কমলে দেশ মহা সংকটে পড়বে: মজিবুর রহমান মঞ্জু আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ

ডিআরইউতে গণমাধ্যম সংস্কার বিষয়ক সেমিনার

রিপোটার:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫
  • ১৩ Time View

সংবিধানে গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ হিসেবে অর্ন্তভূক্ত করা, তথ্য জানার অধিকারকে সংবিধানের মৌলিক অধিকার হিসেবে অর্ন্তভূক্ত করা এবং প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমকে একটি বেতন কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার জন্য আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে, ২০২৫) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে ‘‘গণমাধ্যম সংস্কার : সমস্যা ও করণীয়” শীর্ষক সেমিনারে এসব দাবি জানানো হয়। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশ এর উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

ডিআরইউ সহ-সভাপতি গাযী আনোয়ারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য এবং ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম। আরো বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম ও সিনিয়র সাংবাদিক আসিফ শওকত কল্লোল।

অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশের সদস্য সচিব মো. মিয়া হোসেন। অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর অ্যাপ ট্যাপট্যাপ সেন্ড। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক এমদাদুল হক খান, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ), কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির), আকতারুজ্জামান, আমিনুল হক ভুঁইয়া, সুমন চৌধুরী, মো. সলিম উল্যা (এস. ইউ সেলিম)সহ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ডিআরইউ’র পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

সেমিনারে আরো দাবি জানানো হয়, সকল গণমাধ্যমকে মিডিয়া তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করা, চলচ্চিত্রের মতো জাতীয় গণমাধ্যম ও সাংবাদিক পুরস্কার প্রদান করা, স্যাটেলাইট টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইন গণমাধ্যম ডিক্লারেশনের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন আইন প্রণয়ন করে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। সেই সাথে নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করে সাইবার ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা সকল মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়। বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে স্টেক হোল্ডারদের রাখা হয়নি। তারা যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুস্ট নই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ, সেটা আমরা চাই। গত ১৬ বছর গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা ছিলো না। বর্তমান সরকারের আমলে যেন সেটা না হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছেন। সবচেয়ে বেশি ইমেজ সংকটে পড়েছিল পুলিশ বিভাগ, বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্র। বিচারবিভাগ পরিণত হয়েছিল অবিচারের ঘানিতে আর বয়োজ্যেষ্ঠ সম্পাদকদের তৈলাক্তে সম্মানহানিতে পড়েছিল সাংবাদিকরা। এজন্য আমরা নিজেরাই দায়ী ছিলাম। সম্পাদক নিজের সম্মান বিলিয়ে দেওয়ার মানে সাংবাদিক সমাজকে ইমেজ সংকটের মধ্যে ফেলে দেওয়া।

তিনি বলেন, বিচারব্যবস্থা সবচেয়ে কলুষিত করেছিল যে ব্যক্তি সেই মো. নিজামুল হক নাসিমকে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। সেখান থেকে কী আশা করা যায়, এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে কার্যকারিতা হারিয়ে যায়। তখনই সাংবাদিকদের প্রতিবাদ করা উচিত ছিল কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করেননি। আমাদের নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদ এলিট শ্রেণির। কেউ কেউ বলেন নোয়াব নাকি নবাব। আমার দেশ পত্রিকা সেই এলিট থেকে আলাদা, ওই শ্রেণিতে নেই। আমরা গণমানুষের হয়ে থাকতে চাই।

গণমাধ্যমের ছুটি প্রসঙ্গে এ সম্পাদক বলেন, সরকারি চাকরিজীবীরা ১০ দিন ছুটি পাবেন ঈদুল আজহায়। আমার ক্ষমতা থাকলে আজই অন্তত চারদিনের ছুটির ঘোষণা দিয়ে রাখতাম। কিন্তু এ ক্ষমতা আমার নেই। এটা নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদ নামে এলিট শ্রেণি করবে। তবে ঈদের সময় অন্তত চারদিন ছুটি থাকা দরকার। অনলাইনে যারা ছুটি বিসর্জন দিয়ে কাজ করছেন তাদের উপযুক্ত আর্থিক সুবিধা দিতে হবে।

তিনি বলেন, গণমাধ্যম চতুর্থ স্তম্ভ হতে পারেনি। চতুর্থ স্তম্ভ দাবী করার আগে আমাদেরকে মাথা তুলে দাড়াতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য একতাবদ্ধ হতে হবে। আগামীতে যে সরকার আসবে সেই সরকার যদি এই সংস্কার না মানে তাহলে আমরা কি করবো সেই পরিকল্পনা করার আহ্বান জানান তিনি।

ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, দেশ স্বাধীনের আগে যেমন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ছিল না, স্বাধীনের পরও একই অবস্থা দেখেছি। ’৭৫ সালে সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়ে সাংবাদিকদের বেকার করা হয়েছিল। ’৯০ সালে নির্বাচিত সরকার এসে সাংবাদিকরা কিছুটা স্বাধীনভাবে কাজ করেন; তবে ২০০৬ সালের পর সেই স্বাধীনতা আবারও খর্ব করা হয়, যা চলে ১৬ বছর ধরে। কাজের পরিবেশ ছিল না। এজন্য আমরা গণমাধ্যম সংস্কারে মূল বিষয় তুলে আনার চেষ্টা করেছি, যা ছিল সংবাদপত্র ও সংবাদিকদের স্বাধীনতা। যেখানে সাংবাদিকদের আর্থিক স্বাধীনতা ও কাজের পরিবেশ নিহিত রয়েছে। এটা এমনভাবে করা যেখানে যুদ্ধাবস্থা ছাড়া কেউ এই সুবিধা খর্ব করতে পারবে না।

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ বলেন, অনেকেই বলছেন আগেই ভালো ছিলাম। তবে ম্যাজিক্যালি রাতারাতি সব পরিবর্তন হয় না। কিন্তু বিগত ১৬ বছরের মুক্ত গণমাধ্যম দিবস মুক্ত পরিবেশে কেউ পালন করতে পারিনি। সব জায়গায়ই বাধা দেওয়া হয়েছে। কেউ স্বাধীনভাবে লিখতে পারেননি। এখন সেই পরিবেশ নেই, লিখতে পারছেন সবাই, কেউ চোখ রাঙাচ্ছে না। তবে এই পরিবেশ কতদিন রাখতে পারবো সেই নিয়ে ভাবতে হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, একটা সময় ছিল যখন তথ্য চাইতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে। কাউকে আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটক রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সেখান থেকে এখন মুক্ত হয়ে কাজ করছেন সংবাদকর্মীরা। আমরা নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা চাই। মামলা-হুমকি যেন আগামীতে না হয় সে বিষয়েও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তিনি ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য কাজ করতে সকলের প্রতি আহবান জানান।

ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, বিগত ৫৪ বছরে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা সুরক্ষিত হয়নি। নতুন আমলেও সাংবাদিকদের কোন ধরনের উন্নতি হয়নি। স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়নি, চাকরি ও ওয়েজবোর্ডের নিশ্চয়তাও পাওয়া যায়নি। এ জন্য সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য তিনি আহবান জানান। তিনি সাংবাদিকদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য গণমাধ্যমকে সংবিধানের ৪র্থ স্তম্ভ হিসেবে অন্তর্ভূক্তি ও সকল সাংবাদিকদের জন্য অভিন্ন বেতন কাঠামো প্রণয়নের আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে, ডিআরইউ সহ-সভাপতি গাযী আনোয়ার বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার নিয়ে আমলা বান্ধব সংস্কার কমিটি করা হয়েছে, এটা ঠিক হয়নি। আমরা সংস্কার প্রতিবেদনের উপরে সুপারিশ দিয়েছি তার বাস্তবায়ন হয়নি। তাই আমাদের সাংবাদিকদের নিয়ে আরেকটি সংস্কার কমিটি করার আহ্বান জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই জাতীয় আরো খবর

খুলনায় জমি বিক্রি হবে

খুলনা-যশোর বিশ্বরোডে মোস্তফার মোড়ের নিকটে টুটুল নগর আবাসিক এলাকায় এখনই বাড়ি করার উপযোগী ১০ শতক জমি বিক্রি হবে। ডিজিটাল খাজনা খারিজ করা। সম্পূর্ণ নিষ্কন্টক। বিশ্ব রোড থেকে ২০ ফিট রাস্তা, ভেতরে ১৫ ফিট রাস্তা। উচু জমি।

যোগাযোগ: মো. মহসিন হোসেন-০১৭১১৭৮৩৮৬৮

 

© All rights reserved © 2022 deshnews24.com
Theme Customized By Max Speed Ltd.