ঢাকা: গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পূন:প্রতিষ্ঠায় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ১২টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে ১২ দলীয় জোট। আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
১২ দফা প্রস্তাবনা
১. বিগত ১৫ বছরে ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার হীন উদ্দেশ্যে স্বৈরাচারী সরকার যে সমস্ত বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক সাংবিধানিক পরিবর্তন আনয়ন করেছে, সেগুলো রহিত এবং সংশোধন করতে হবে ও অন্যান্য সাংবিধানিক সংস্কার করতে হবে।
২. গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পূর্ণ প্রতিষ্ঠায় এবং স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে স্থায়ী সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে।
৩. তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং সংস্কার শেষে স্বল্পতম ও যৌক্তিক সময়ে একটি নির্বাচনের রোড ম্যাপ প্রকাশ করতে হবে।
৪. রাজনৈতিক দলসমূহের মতামত ও দেশের বিশিষ্টজনদের অভিমতের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন, দক্ষ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কালো আইন বাতিল করে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংস্কার করতে হবে ।
৫. একটি প্রশাসনিক সংস্কার কমিটি গঠন করে সকল প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্গঠন করতে হবে। পুলিশের কর্মবিমুখতা এবং দায়িত্বহীনতার মানিসিকতাকে অবিলম্বে বন্ধ করে তাদেরকে ঠিক পথে পরিচালিত করতে হবে। ৬. সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার নির্বাহী ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন করতে হবে। পরপর দুইটার্মের অতিরিক্ত কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
৭. দুর্নীতি দমন কমিশন ও দুর্নীতি দমন আইন সংস্কারের পাশাপাশি পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে দুদকের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। দুদককে আরো বৃহত্তর পরিসরে ব্যবহার করতে হবে।
৮. দেশের বাইরে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইনানুগ এবং কুটনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিস্প্রয়োজনীয় কিংবা স্বল্প প্রয়োজণীয় ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম সমূহ বন্ধ করতে হবে। এডিপি-র অর্থ প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম সমূহে ব্যয় করতে হবে ।
৯. প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে সকল মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদীর ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক রাষ্ট্র কাঠামো তৈরি করতে হবে।
১০. বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে বর্তমান বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি জুডিশিয়াল কমিটি গঠন এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অভিশংসন প্রশ্নে সংবিধানে কথিত ইতিপূর্বেকার সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে।
১১. সরকারী আমলা এবং শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগের মানসিকতা বন্ধ করতে হবে।
১২.বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গণহত্যার শিকার শহীদদের সঠিক তালিকা প্রকাশ, আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
উপস্থিত ছিলেন
১। মোস্তফা জামাল হায়দার চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টি ও জোট প্রধান ১২ দলীয় জোট।
২। শাহাদাত হোসেন সেলিম মহাসচিব বাংলাদেশ এলডিপি ও মুখপাত্র ১২ দলীয় জোট
৩। । সৈয়দ এহসানুল হুদা, চেয়ারম্যান বাংলাদেশ জাতীয় দল ও সমন্বয়ক ১২ দলীয় জোট।
৪। ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম মহাসচিব জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।
৫। ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান সভাপতি জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)
৬। শাহ আহমেদ বাদল মহাসচিব বিকল্পধারা বাংলাদেশ
৭। লায়ন মুহাম্মদ ফারুক রহমান, চেয়ারম্যান বাংলাদেশ লেবার পার্টি
৮। শামসুদ্দিন পারভেজ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি