বিদ্রোহী যোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসান হয়েছে। রোববার আর্মি অফিসারদের উদ্দেশে এ কথা বলেছে দেশটির সেনাবাহিনীর কমান্ড। সিরিয়ার একজন কর্মকর্তা যিনি এই পদক্ষেপের সঙ্গে অবগত ছিলেন তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা বলেছেন।
এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা বলেছে, দেশটির রাজধানী দামেস্ক ‘এখন আসাদ মুক্ত’।
সেনাবাহিনীর কোনো বাধা ছাড়াই বিদ্রোহী যোদ্ধাদের রাজধানীতে প্রবেশের খবরে বাশার আল-আসাদ এর আগে রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালিয়ে যান। বার্তা সংস্থা রয়টার্স দুই সিনিয়র সিরিয়ান কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, একটি বিমানে চড়ে দামেস্ক ছেড়ে অজানা গন্তব্যে চলে গেছেন তিনি।
বাশার আল-আসাদ দামেস্ক ছাড়লেও কোথায় গেছেন তা জানা যায়নি। লন্ডনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ছেড়ে গেছে। সেই উড়োজাহাজে বাশার আল-আসাদ থাকতে পারেন। ওই উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের পর বিমানবন্দর থেকে সরকারি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।
বিদ্রোহী যোদ্ধারা জানিয়েছে, তারা দামেস্কে ঢুকে পড়েছে। শহরে কোনো সেনা মোতায়েন নেই।
রয়টার্স জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের রাজধানী দখলের খবরে হাজার হাজার মানুষ গাড়িতে ও পায়ে হেঁটে দামেস্কের প্রধান চত্বরে জড়ো হয়ে ‘স্বাধীনতা; স্লোগান দিতে থাকে। সেখানে থাকা বিদ্রোহীরা বলেছে, ‘আমরা সিরিয়ার জনগণের সঙ্গে আমাদের বন্দীদের শিকলমুক্ত এবং সেদনায়া কারাগারে অন্যায়ের যুগের সমাপ্তি ঘোষণা করার খবর উদযাপন করছি।’ সেদনায়া হলো দামেস্কের উপকণ্ঠে একটি বড় সামরিক কারাগার যেখানে সিরিয়ার সরকার হাজার হাজার বিদ্রোহীকে আটক রেখেছে।
ফ্লাইটরাডার ওয়েবসাইটের তথ্যের বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী বিদ্রোহীদের দখল করে নেওয়ার খবর পাওয়ার পর সিরিয়ান এয়ারের একটি উড়োজাহাজ দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। বিমানটি প্রাথমিকভাবে সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে উড়ে যা আসাদের শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু তারপর উড়োজাহাজটি হঠাৎ করে ইউটার্ন নেয় এবং রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। তবে রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি কে ছিলেন বিমানটিতে।
সিরিয়ার প্রধান বিরোধী গোষ্ঠীর প্রধান হাদি আল-বাহরা রোববার ঘোষণা করেছেন, দামেস্ক এখন ‘বাশার আল-আসাদ মুক্ত।’ সিরীয় জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের ঘোষণা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি নিরাপদ। প্রতিশোধ নেওয়ার কোনো দরকার নেই। সিরিয়ার ইতিহাসে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান হয়েছে। সেনাবাহিনী পুনর্গঠন করা হবে।’