বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রবীণ সদস্য (রুকন), ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ২ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় ৬৮ বছর বয়সে ইন্তিকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন)। তিনি স্ত্রী, ৪ পুত্র ও ২ কন্যাসহ বহু আত্মীয়-স্বজন রেখে গিয়েছেন।
শোকবাণী
ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিনের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ৩ জানুয়ারি এক শোকবাণী প্রদান করেছেন।
শোকবাণীতে তিনি বলেন, ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ এর সভাপতি হিসেবে মায়ের মমতা দিয়ে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। চরম প্রতিকূল পরিবেশেও তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে ফোরামের কাজ আঞ্জাম দিয়েছেন। কার্যত তিনি ছিলেন ফোরামের প্রাণ। আমি তাঁর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
শোকবাণীতে তিনি আরও বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁকে ক্ষমা ও রহম করুন এবং তাঁর কবরকে প্রশস্ত করুন। তাঁর গুনাহখাতাগুলোকে ক্ষমা করে দিয়ে নেকিতে পরিণত করুন। কবর থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রত্যেকটি মঞ্জিলকে তাঁর জন্য সহজ, আরামদায়ক ও কল্যাণময় করে দিন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন এবং তাঁর শোকাহত পরিবার-পরিজন, প্রিয়জন ও সহকর্মীদেরকে এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।
ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিনের জানাযা ও দাফন সম্পন্ন
২ জানুয়ারি রাত সোয়া ৯টায় রাজধানী ঢাকার উত্তরাস্থ আই ই এস স্কুল মাঠে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের ইমামতিতে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। ৩ জানুয়ারি বাদ জুমআ নীলফামারী জেলা সদরের টুপামারীস্থ নিজ গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাযা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। দ্বিতীয় জানাযায় ইমামতি করেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম।
মরহুম প্রকৌলশী গিয়াস উদ্দীন একজন অনুগত, আমলদার ও সংগঠনের নিবেদিত প্রাণ দায়িত্বশীল ছিলেন
মাওলানা আবদুল হালিম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, মরহুম প্রকৌলশী গিয়াস উদ্দীন সকল দিক থেকে একজন অনুগত, আমলদার এবং সংগঠনের প্রতি নিবেদিত প্রাণ দায়িত্বশীল ছিলেন। তিনি তার সংগঠনের বড় দায়িত্বে থাকার পরও অর্থের প্রতি তার কোন লোভ ছিল না।
৩ জানুয়ারি শুক্রবার বাদ জুমআ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের যুগ্ন আহবায়ক ও ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দীনের জানাযা পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় মাওলানা আবদুল হালিম এসব কথা বলেন।
মাওলানা আবদুল হালিম আরও বলেন, আমীরে জামায়াতের দৃষ্টিতে একজন ভালো মানুষ হওয়া কঠিন ব্যাপার। আমীরে জামায়াত তার ফেসবুকে যে নোট দিয়েছেন এতে আমীরে জামায়াত তার উপর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এটার অন্যতম কারণ হচ্ছে অনেক সময় অনেক জ্ঞানী-গুণী পাওয়া যায় কিন্তু অনুগত ও আমলদার মানুষ পাওয়া খুবই কঠিন।
তিনি বলেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এর জন্য অনেক কাজ করেছেন মরহুম গিয়াস উদ্দীন। কাজের প্রতি অনেক যতœশীল ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের উন্নয়নে তিনি অনেক কাজ করেছেন। নতুন বাংলাদেশ গঠনে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল। নতুন বাংলাদেশ গঠনে তিনি যে নিয়ত করেছিলেন আশা করি আল্লাহ তায়ালা এই কাজে বরকত দিবেন এবং পরবর্তী পর্যায়ে যারা সংগঠনটির দায়িত্বে আসবেন তারা তাকে অনুসরণ করে কাজ চালিয়ে যাবেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা আল্লাহর প্রিয় একজন গোলামকে হারিয়ে ফেললাম। আমরা দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক। সেই সাথে শোকাহত পরিবারকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন।
শুক্রবার বাদ জুমআ মরহুমের গ্রামের বাড়ী নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারী চৌধুরী পাড়া ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। দ্বিতীয় জানাযা নামাজে ইমামতি করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। জানাযা নামাজে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
জানাযা নামাজ পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার, জেলা সেক্রেটারী আন্তাজুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. খায়রুল আনাম, ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মরহুমের ছেলে মিনারুল হক প্রমুখ।
এছাড়া জানাযা নামাজে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতীফ, জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি প্রভাষক ছাদের হোসেন, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান মন্টু, আব্দুল কাদিম প্রমুখ।