সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনামঃ
আ.লীগকে কোনোভাবেই নির্বাচনে আসতে দেওয়া হবে না: আখতার হোসেন সাধারণ মানুষ সংস্কার কী বোঝে না: মির্জা ফখরুল স্বরাষ্ট্র সচিব হলেন নাসিমুল গণি তারেক রহমান দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করেন : আতিকুর রহমান রুমন রাউন্ড টেবিল, নতুন টক শো, বুধবার চ্যানেল আইতে প্রচারিত হবে দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ফিরিয়ে আনতে হবে: মুহাম্মদ শাহজাহান পতিত” আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসন রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে : আমিনুল হক আগামী বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্য আমরা এমন সমাজ চাই যেখানে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ থাকবে না: মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন মতিঝিল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনী আগামী ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি

গণমাধ্যমকে পরাজিত হতে দেয়া যাবে না: কাদের গণি চৌধুরী

রিপোটার:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৩২ Time View

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন- বিএফইউজে মহাসচিব, দেশের আলোচিত সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী বলেছেন, গণমাধ্যমের পরাজয় মানে জনগণের পরাজয়। আর জনগণের পরাজয় মানে রাষ্ট্রের পরাজয়। তাই গণমাধ্যমকে পরাজিত হতে দেয়া যাবে না।

তিনি বলেন, সত্য বলার সাহসিকতা সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র। সৎ সাংবাদিকতা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে।সৎ সাংবাদিকতা সত্যের আরাধনা করে। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা সমাজকে এগিয়ে নেয়, গণতন্ত্রকে বিকশিত করে। তাই সততা ও নিষ্ঠার সাথে সাংবাদিকতা করতে হবে। সততা না থাকলে সাংবাদিকতা থাকে না। সাংবাদিকদের কলম মুক্ত হলে সমাজ উপকৃত হয়। আবার কলমের শক্তিকে ইতিবাচক কাজে ব্যবহার না করলে জাতির সর্বনাশ ঘটে। তাই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে কোনো অজুহাত নয়। একপেশে, দলবাজি সাংবাদিকতা নয়, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নয়, গণমানুষের মনের কথা পত্রিকার পাতায় পাতায় তুলে ধরতে হবে। যতই অলিখিত সরকারি কালাকানুন থাকুক না কেন, ক্ষমতাশালীদের বাধা থাকুক না কেন, গণমানুষের কথা আমাদের বলতে হবে।

তিনি মনে করেন, জনগণ দাস সাংবাদিকতাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। তাদের আত্মসমর্পণকে ঘৃণা করে। তাই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সম্পাদক-সাংবাদিকদের নির্ভীক, নির্লোভ ভূমিকা পালন করতে হবে।

সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, সাংবাদিক নেতা মো. শহীদুল ইসলাম।

সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার সভাপতি জি এ এম আশেক উল্লাহর সভাপতিত্বে শুক্রবার (০১ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় কাদের গণি চৌধুরী বলেন, সংবাদপত্র জাতির দর্পণ শুধু কাগজ-কলমে নয়, বক্তৃতা-ভাষণে নয়; সত্যিকারভাবে জাতির বিবেকের ভূমিকা পালন করতে হবে। মোহমুক্ত হয়ে সাংবাদিকতা করতে পারলেই বাংলাদেশকে দুর্নীতি ও ফ্যাসিবাদমুক্ত করা সম্ভব হবে।

এই সাংবাদিক নেতা বলেন, দলবাজি, দাসবাজি সাংবাদিকতায় আমরা এত জড়িয়ে পড়েছি যে, পথ ভুলে অন্ধ গলিতে হাবুডুবু খাচ্ছি। সাদাকে সাদা বলতে পারছি না। রাজনীতির চোরা গলিতে সংবাদপত্র ডুবে আছে। এমন দলবাজি-দলদাসী মানসিকতা সৃষ্টি হয়েছে যে, তথ্যনির্ভর কোনো সংবাদ বা কলাম বিগত ১৫ বছরে পত্রিকায় দেখা যায়নি। তখন পত্রিকা অফিস থেকে বলা হতো, প্রকাশে অনেক ঝুঁকি আছে। ঝামেলা আছে। বাধা আছে। সত্যিকার অর্থে একটি ভালো মানের পত্রিকার কোনো ব্যবসায়িক স্বার্থ থাকে না। কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, সরকার বা বিদেশি রাষ্ট্র বা তাদের কোনো এজেন্টদের কাছে কোনো দায়বদ্ধতা থাকে না।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, একজন সাংবাদিকের কাজ সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা। সে জন্য গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ বলা হয়। এই দর্পণে প্রতিবিম্বিত হয় সমাজের প্রতিচিত্র। অন্যায়, অনিয়ম, নিগ্রহ, শোষণ-বঞ্চনা ও অধিকার হরণের বিরুদ্ধে একজন সাংবাদিককে সোচ্চার থাকতে হয় সবসময়। চোখ রাঙানোকে তোয়াক্কা না করে নির্ভীক ও নিরলসভাবে কাজ করতে হয়। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার চিত্র প্রত্যক্ষ করতে হয়। মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করতে হয়। অনেক বাধা বিপত্তির মধ্যে তাদের দিন যায়। ক্ষমতাধরদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হয়। অভাব অনটনের ভেতর শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে হয়। পরিশ্রম করতে হয় অনেক।

তাঁর মতে, সততা নীতি ও আদর্শ নিয়ে যারা সাংবাদিকতা করেন অর্থাভাব তাদের নিত্যসঙ্গী। টানাপোড়েনের ভেতর দিয়ে তাদের চলতে হয়। সংসার চালানো তাদের জন্য বড় কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। দারিদ্রের ঘেরাটোপে বন্দি থেকে তাদের জীবন কাটাতে হয়। তারপরও অসত্যের কাছে মাথা নত করে না। এজন্যই সাংবাদিকদের বলা হয় জাতির বিবেক।

তিনি বলেন, আজ সেই সাংবাদিকও নেই, সেই সাংবাদিকতাও নেই। অযোগ্য অর্বাচীন কিছু মানুষের পদচারণায় কলঙ্কিত হতে দেখা যায় বাংলাদেশের সাংবাদিকতার গৌরবময় জগৎ। কোনো মহৎ উদ্দেশ্য থেকে নয়, অর্থলিপ্সুতা থেকে এবং সমাজে প্রভাব তৈরি করার ইচ্ছে থেকে অনেকে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হন। ভুঁইফোড় সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তারা নানা ধান্ধাবাজি করে। নানারকম অপতৎপরতায় লিপ্ত থাকে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে সংবাদ পরিবেশনের হুমকি দেয়। ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দেদারসে অর্থ আদায় করে। খুব অল্পসময়ের মধ্যে এরা অর্থ সম্পদের মালিক হয়ে যায় এবং একই ধরণের কিছুসংখ্যক ব্যক্তি মিলে গড়ে তোলে সাংবাদিক সিন্ডিকেট। এদের পড়াশোনা ও মেধার ঘাটতি থাকে। সাংবাদিকতার সঠিক সংজ্ঞাও এরা জানে না। দু’য়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে এরা সুসম্পর্ক তৈরি করে। এবং তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত লিখিত নিউজ কপি করে সংবাদ মাধ্যমে পাঠায়। অজ্ঞতা অনেক থাকলেও এরা সাংবাদিকতার তকমা পরে ঘুরে বেড়ায়। এদের কারণে সাংবাদিকতা পেশার মর্যাদা নষ্ট হচ্ছে। কলুষিত হচ্ছে সাংবাদিকতার জগৎ। এদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে সবার রুখে দাঁড়ানো প্রয়োজন।

তিনি মনে করেন, সাংবাদিকতার মর্যাদা অক্ষুণ্ন ও সমুন্নত রাখার জন্য সাংবাদিকদেরই পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এবং সাংবাদিকদের উচিত এদের অসহযোগিতা করা। এরা সাংবাদিকদের ইজ্জত সম্মান নষ্ট করছে।

জেইউসি’র সাধারণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের এখনও চুড়ান্ত বিজয় আসেনি। আংশিক বিজয় এসেছে। এখনও দেশের বিরুদ্ধে নানা ভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। কখনও আনসার বিদ্রোহ হয়ে, কখনও বিচার বিভাগে, কখনও সরকারের উপদেষ্টাদের বিতর্কিত করার চেষ্টার মধ্যদিয়ে। এখন আমাদের ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে।

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, কাজ ও কথায় যদি আমাদের না মেলে তখন নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হয়। এখন সেই সময় নয়। ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে বিজয় ধরে রাখা যাবে না।

সাংবাদিক নেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, যারা ফ্যাসিবাদের হয়ে যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদের বড় একটা অংশ হলো সাংবাদিক। এই সাংবাদিকরা ঠিক থাকলে দেশে ফ্যাসিবাদ হতো না।

তিনি দেশে কোন গণমাধ্যম বন্ধ হবে না জানিয়ে বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরের মতো সাংবাদিকতা করলে হবে না।

সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সরওয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম শ্রম অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক আবদুস সাব্বির ভূঁইয়া, কক্সবাজার প্রেসক্লাব সভাপতি মাহবুবর রহমান, সাংবাদিক নেতা তালুকদার রুমি, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মুহম্মদ নুরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি ও কক্সবাজার প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন বাহারী, সিনিয়র সদস্য এস এম আমিনুল হক চৌধুরী, আতাহার ইকবাল, কামাল হোসেন আযাদ, আবু সিদ্দিক ওসমানী, রুহুল কাদের বাবুল, বর্তমান সহ-সভাপতি এম আর মাহবুব, ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক কালের কন্ঠের কক্সবাজার ব্যুরো চীফ আনছার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাফর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রশীদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার সভাপতি জি এ এম আশেক উল্লাহ।

পরে সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার-জেইউসি’র ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কক্সবাজার প্রেসক্লাব সভাপতি মাহবুবর রহমান ও সিনিয়র সদস্য এস এম আমিনুল হক চৌধুরীকে নির্বাচন কমিশনার মনোনীত করা হয়।

জুমার নামাজের বিরতির পর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সেশন হয়। সেখানে সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদনসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই জাতীয় আরো খবর

খুলনায় জমি বিক্রি হবে

খুলনা-যশোর বিশ্বরোডে মোস্তফার মোড়ের নিকটে টুটুল নগর আবাসিক এলাকায় এখনই বাড়ি করার উপযোগী ১০ শতক জমি বিক্রি হবে। ডিজিটাল খাজনা খারিজ করা। সম্পূর্ণ নিষ্কন্টক। বিশ্ব রোড থেকে ২০ ফিট রাস্তা, ভেতরে ১৫ ফিট রাস্তা। উচু জমি।

যোগাযোগ: মো. মহসিন হোসেন-০১৭১১৭৮৩৮৬৮

 

© All rights reserved © 2022 deshnews24.com
Theme Customized By Max Speed Ltd.