ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ৩ ডিসেম্বর এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “২ ডিসেম্বর দুপুরে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ‘হিন্দু সংগ্রাম সমিতি’ নামে ভারতের একটি উগ্র সংগঠন ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়, অনাকাক্সিক্ষত ও অনভিপ্রেত। এ ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের হাইকমিশনে ভাঙচুর চালানো ও জাতীয় পতাকা নামিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া জেনেভা কনভেনশন, আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থি। এ ঘটনা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বন্ধুৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিনষ্ট করার এক গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অংশ বলেই আমরা মনে করি।
তিনি বলেন, ভারত নিজের দেশে তার প্রতিবেশি দেশের কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা দিতে যেখানে ব্যর্থ, সেখানে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির দেশ, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দেশ বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার তাদের থাকতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ তাদের মাথার উপর কারো দাদাগিরি একদম পছন্দ করেনা। আমরা বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণকে চোখ-কান খোলা রেখে সজাগ ও সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্যই বিদেশী যে কোনো আগ্রাসন রুখে দিতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির মূল কথা হল ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়।’ বাংলাদেশ সহাবস্থানের নীতিতে বিশ্বাসী একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। বাংলাদেশও বিশ্বের সকল দেশের কাছে একই নীতি আশা করে।
তিনি বলেন, আগরতলাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন। এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনসহ সকল হাইকমিশনের নিরাপত্তা বিধান করা ভারত সরকারের দায়িত্ব।
ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের এবং ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সকল কূটনৈতিক মিশন, কূটনীতিক ও অ-কূটনীতিক কর্মীদের নিরাপত্তা বিধান করার জন্য আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”