ঢাকা: সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিমানবন্দরে আইন, বিচার ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে হেনস্তার ঘটনায় জেনেভায় বাংলাদেশ মিশনের শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মদ কামরুল ইসলামকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁকে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়েছে।
জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডি এবং সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গত বৃহস্পতিবার দেশে ফিরছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। দূতাবাসের প্রটোকলে তিনি গাড়িতে করে জেনেভা বিমানবন্দরে পৌঁছান। গাড়ি থেকে নামার পর হঠাৎ একদল লোক এসে তাঁকে ঘিরে ধরে হেনস্তা করেন। এ সময় আসিফ নজরুলের সঙ্গে ছিলেন জেনেভা মিশনের শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম ও মিশনের স্থানীয় কর্মী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত মিজান। কিন্তু এ সময় তাঁরা দুজনই চুপ ছিলেন।
সেদিন বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশের পর এ ঘটনার সময় তাঁর নির্লিপ্ততার কারণ জানতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল। জবাবে কামরুল বলেন, ‘আপনি কথা বলছিলেন, তাই আমি চুপ ছিলাম।’
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, জেনেভা বিমানবন্দরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে হেনস্তার ঘটনাকে সরকার পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে করছে। এ ব্যাপারে জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে ঢাকায় একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে জেনেভায় অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত ঘটনার পর বুধবার মন্ত্রণালয় থেকে বিদেশে বাংলাদেশের সব মিশনে জরুরি একটি পরিপত্র পাঠানো হয়েছে। সেই পরিপত্রে মিশনগুলোকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সরকারি সফরের সময় দুটি বিষয়ে সচেষ্ট থাকতে বলা হয়েছে।
প্রথমত, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিদেশ সফরের সময় তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যথাযথ প্রটোকল দেওয়া বাংলাদেশের মিশনগুলোর বিশেষ দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে শৈথিল্যের কোনো সুযোগ নেই। দ্বিতীয়ত, বিদেশি মিশনগুলোকে এ ধরনের সফর শুরুর আগেই সফরকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সফরের সময় যেকোনো অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে আরও সচেষ্ট থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, মিশনের শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মদ কামরুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজের পাশাপাশি মিজানকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিসিএস ২৯ ব্যাচের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম ২০২১ সালে জেনেভার বাংলাদেশ মিশনের শ্রম উইংয়ে যোগ দেন। উপসচিব পদমর্যাদার এই কর্মকর্তা এর আগে প্রবাসীকল্যাণ সচিবের একান্ত সচিব ছিলেন।